ফাইল চিত্র।
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বেশ অনেক দৃশ্যেই অভিনয় করেছিলাম ‘সাগিনা মাহাতো’য়। তার মধ্যে কিছু টালিগঞ্জের স্টুডিয়োয়, কিছু উত্তরবঙ্গের আউটডোরে। দেখেছিলাম, কী ভাবে চপলমতি বালকের মতো মানুষটার সামনে ক্যামেরা চালু হতেই বেরিয়ে আসে গুরুগম্ভীর, ভীষণ মনোযোগী এক শিল্পীসত্তা। আউটডোরের প্রথম চার দিন শুটিং হয়নি, আকাশের মুখ ভার থাকায়। সকালে উঠে মেকআপ করে তৈরি হয়ে রোদ ওঠার অপেক্ষায় বসে থাকতাম সকলে। প্রায় প্রত্যেক দিনই প্যাক-আপের পরে আড্ডা বসত। সারা দিনের ক্লান্তি কেটে যেত ওই আড্ডায়। তার মধ্যমণি ছিলেন দিলীপ কুমার। কখনও কল্যাণ (চট্টোপাধ্যায়), স্বরূপদের (দত্ত) মতো জুনিয়রদের পিছনে লাগতেন, আবার কখনও একা বসে গান বা গিটার বাজানো শুনতেন। রোজ সন্ধ্যায় ঘণ্টাতিনেক চলত এই আড্ডাটা। গানগল্পের ফাঁকে মাঝে মাঝেই উনি উঠে ঘরে চলে যেতেন। সেটা প্রাকৃতির ডাকে সাড়া দিতে, নাকি সায়রা বানুকে দেখতে— সেটা অবশ্য কখনও জিজ্ঞেস করিনি!
ডাবিংয়ের সময়ে দেখেছিলাম, কতটা পারফেকশনিস্ট উনি। একই সংলাপ পনেরো-কুড়ি বার করে বলতেন নানা ভাবে। স্টুডিয়োয় শুট করা দৃশ্যের পরিষ্কার সাউন্ডও কী করে আরও ভাল করা যায়, সেটা নিয়ে খুঁতখুঁতে ছিলেন। একজন প্রকৃত শিল্পীরই এমন ডেডিকেশন থাকে।