পরদায় এ বার তিনি ভুখারাম! যে কিনা কখনও রোবট সাজে। কখনও ফাঁকা মাঠে বসে ঠোঙা ফাটায়। কখনও সে আবার সবুজ-লাল চেন বিক্রি করে। কখনও আয়না নিয়ে শুধু বসেই থাকে।
ভুখারাম মানুষ হয়েও ঠিক যেন মানুষ নয়, হতে পারে মানুষের মন। হয়তো বা দ্বিতীয় সত্তাও। রাজা ঘোষের নতুন ছবি ‘চাবিওয়ালা’য় এমনই একটি জটিল চরিত্রে দেখা যাবে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ফোনে রাহুল বললেন, ‘‘অভিনয়ের ক্ষেত্রে বাবা এবং মা দুটোই হল যুক্তি। কিন্তু এই ভুখারাম চরিত্রটা এমন যে, একে যুক্তি দিয়ে গাঁথা মুশকিল। তার স্বভাব-পোশাক, তার চিন্তা বা আচরণের পরম্পরা সবেতেই সে যুক্তিহীন। আমি তাই অভিনয়ের ডিজাইনে যুক্তিহীন থাকতে চেষ্টা করেছি।’’
গ্রাম পলাশপুর। তার দুই চাবিওয়ালা ভবেন (কৌশিক কর) আর নগেন (সৌমেন চক্রবর্তী) কলকাতায় আসে।
ভবেন খানিক স্বপ্নচারী। ভাবালু। চাবি তৈরির সঙ্গে সঙ্গেই সে খুঁজে বেড়ায় তার হারানো প্রেমিকা ফতিমাকে (অমৃতা চট্টোপাধ্যায়)। নগেন ঠিক তার উলটো। অর্থই যার মোক্ষ। উপার্জনের জন্য সে সব পারে।
ভবেন কি খুঁজে পাবে ফতিমাকে? নগেন কি পাবে তার আরও আয়ের কোনও সুগম রাস্তা! আপাতভাবে গল্পের মোড়ে মোড়ে তার তলাশ থাকলেও, কাহিনিতে ‘চাবি’ আর ‘চাবিওয়ালা’, এই শব্দযুগল কোথায় যেন প্রতীকী হয়ে ওঠে। সেই প্রতীকী মোড়ক থেকে কখনও আলো পড়ে মৃত্যুচিন্তায় ভোগা এক সাহিত্যিকের (শুভাশিস মুখোপাধ্যায়) উপর, তো কখনও নিকটজনের গোপন জীবনের অলিগলিতে।
একে একে হারিয়ে যাওয়া অনেক জীবনের রাস্তা খুঁজে দেওয়ার কান্ডারি হয়ে যেন দেখা দেয় চাবিওয়ালা। তবে কি প্রত্যেকের জীবনেই এমন কোনও চাবিওয়ালা দেখা দিলে ভাল? এরাই কি পারে সামাজিক অসাম্য, আর্থিক বৈষম্য, ধর্মীয় ভেদাভেদ থেকে নেমে আসা বন্দিদশা, তার জটিলতা ঘুচিয়ে দিতে? বাস্তব আর পরাবাস্তবতার দোলাচলে মোড়া ছবি ‘চাবিওয়ালা’ যেন তারই গল্প।
দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন সোহাগ সেন, শঙ্কর দেবনাথ। ছবির মুক্তি পাবে সম্ভবত ডিসেম্বরে। তার আগে দেখা যেতে পারে কোনও চলচ্চিত্র উৎসবে।