অনুপম খের। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে ৪০ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা অনুপম খের। এই দীর্ঘ সফরে নানা রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে নিজের জীবন থেকে বেশ কিছু ঘটনা ভাগ করে নিলেন।
অনুপম জানান, এক সময়ে অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। দীর্ঘ ৩ বছর অবসাদের মধ্যে ছিলেন তিনি। ৮ বছর আগে এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন, যখন রাতে দু’চোখের পাতা এক হত না। দিনের পর দিন ঘুম আসত না। জোরালো আলোর নীচে শুটিং করলে চোখ দিয়ে জল পড়ত। আবার কখনও চোখ শুকিয়ে আসত।
অভিনেতার কথায়, ‘‘শিকাগোতে গিয়ে একটি স্লিপ-স্টুডিয়োতে কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করি। তার প্রায় ২ বছর পরে আমি আমার চিকিৎসকের কাছে যাই এবং চোখের জন্য এমন ওষুধ দিতে বলি, যাতে জোরালো আলোয় শুটিং করতে পারি। তখন তিনি বলেন, আমার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত।’’
প্রথমে চিকিৎসকের কথা মেনে নিতে চাননি অনুপম। বলেছিলেন, ‘‘আপনি কী বলছেন? আমি জীবন নিয়ে একটি বই লিখেছি আর আমার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন? আমি আমার লেখার মাধ্যমে মানুষকে সারিয়ে তুলছি। আমার বইটা পড়ুন।’’ সেই সময়ে অনুপমের লেখা বই ‘দ্য বেস্ট থিং অ্যাবাউট ইউ ইজ় ইউ!’ মুক্তি পেয়েছিল।
চিকিৎসক স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘‘ঘুম না আসার কারণ চোখ নয়, আপনার মন।’’ অবশেষে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান অভিনেতা। সেই বিশেষজ্ঞ নিজের কিছু সমস্যাও ভাগ করে নেন অনুপমের সঙ্গে। সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন অভিনেতা। দু’জনের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য নিজের লেখা বইটি পড়ারও পরামর্শ দেন তিনি। তার পরেই সেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অনুপমকে ওষুধ লিখে দেন এবং জানান অভিনেতা ‘ম্যানিক-ডিপ্রেশন’-এ আক্রান্ত। চিকিৎসক বলেন, ‘‘সব বিষয়ে আপনি অতিরিক্ত আশাবাদী আর এটাই আপনার অবসাদ। আপনি জোর করে আশাবাদী হন।’’
নিজের ভিতর চলা সমস্যাগুলিকে শনাক্ত করতে পারেন অনুপম এবং মাস খানেক ওষুধ খান। অবশেষে অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠেন অভিনেতা। অনুপম বলছেন, ‘‘অনুপম খের হওয়ার বা ৫৪০টি ছবি করার বোঝা আমি নিজের কাঁধে নিই না। অনুপম খের হওয়ার বোঝা খুব ভারী। তাই আমি গুরুত্ব দিই না। তাই একাকিত্ববোধ নিয়ে বিলাসিতা করা উচিত নয়।’’