সলমন-আরবাজ
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অকালপ্রয়াণ ও তার নেপথ্যের অবসাদের চোরাস্রোত বলিউড ইন্ডাস্ট্রিকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে কতকগুলি বিতর্ক ও আত্মবিশ্লেষণের সামনে। ৩৪ বছরের এই তরুণ তুর্কির উত্থানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর পিছনে বলিউডের নামী ক্যা্ম্পের ষড়যন্ত্র ও চেনা রাজনীতির প্রসঙ্গে সরব অনেকেই। এমন অনেক অভিনেতা-পরিচালক মুখ খুলছেন, যাঁরা নিজেরাও শিকার হয়েছেন এই পক্ষপাতদুষ্ট ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতির। কর্ণ জোহরের বিরুদ্ধে টুইটারে শুরু হয়ে গিয়েছে ক্যাম্পেন, আঙুল উঠেছে যশ রাজ ফিল্মসের দিকেও। অভিযোগের পাল্লা ক্রমশ ভারী হতে দেখে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়ালের পাশাপাশি মুম্বই পুলিশের তরফেও এ নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে।
এই বিতর্কে ঘি ঢেলেছে পরিচালক অভিনব সিংহ কাশ্যপের একটি সাম্প্রতিক পোস্ট, যেখানে পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের ভাই বিশদে জানিয়েছেন, কী ভাবে সলমন খান, আরবাজ় খান ও সোহেল খান মিলে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছেন। অভিনব সেই পোস্টে লিখেছেন, ‘‘সলমন খান ও তাঁর ক্যাম্প ‘বেশরম’ ছবিটি মুক্তির আগে আমার বিরুদ্ধে ক্রমাগত নেগেটিভ ক্যাম্পেন চালিয়েছিল। এমনকি, আমার পরিবারের মহিলাদের ধর্ষণ ও খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। ওঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও ফল হয়নি।’’ অভিনব তাঁর পরিবারের ভাঙন ও ডিভোর্সের জন্যও দায়ী করেছেন সলমন ও তাঁর পরিবারকে।
এত বছর পরে খান-ক্যাম্পের বিরুদ্ধে অভিনবের এই অভিযোগ আবার কিছু পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাঁরই বিরুদ্ধে। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অভিনব নিজেই বলেছিলেন, ‘দবং’-এর পরে যখন তার সিকুয়েলের প্রস্তাব দেওয়া হয় তাঁকে, তখন পরিচালক নিজেই ‘না’ করে দিয়েছিলেন। পরে ছবির পরিচালক হন আরবাজ় খান। ‘দবং’-এর বিপুল সাফল্যের পরে অভিনব ধরে নিয়েছিলেন, তাঁর কৃতিত্ব সলমনের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। সেই কারণে ‘বেশরম’-এর সময়ে সাত কোটি টাকা পারিশ্রমিক হেঁকেছিলেন। ছবি মুখ থুবড়ে পড়লে তার দায়ও নিতে চাননি।
ব্যক্তিগত ভাবে শুধু সলমনই নন, ইন্ডাস্ট্রির কারও সঙ্গেই সদ্ভাব নেই অভিনবের। ভাই অনুরাগ কাশ্যপও স্পষ্ট করেছেন, এ ব্যাপারে তিনি জড়াতে চান না। সুশান্তের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী ক্যাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন অভিনব, তাতে সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্ডাস্ট্রি কার্যত দ্বিধাবিভক্ত।