জগন্নাথ-ঊর্মিমালা। ছবি: সংগৃহীত।
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র কণ্ঠস্বর দিয়ে ছবি আঁকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সেই ছবি আঁকার কাজটি করে চলেছেন বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসু এবং ঊর্মিমালা বসু। বাংলা শ্রুতিনাটক ও আবৃত্তি জগতের জনপ্রিয় এই শিল্পী দম্পতির দীর্ঘ পথচলাকে তুলে ধরতে তৈরি হয়েছে একটি তথ্যচিত্র। নাম ‘যুগলেষু’। পরিচালনায় পলাশ দাস।
‘যুগলেষু’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে জগন্নাথ বসু এবং ঊর্মিমালা বসু। ছবি: সংগৃহীত
বাংলা শ্রুতিনাটক ও আবৃত্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন চর্চা করছেন জগন্নাথ এবং ঊর্মিমালা। আজকে তাঁদের নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি হচ্ছে। কী রকম প্রতিক্রিয়া তাঁদের? ঊর্মিমালা বললেন, ‘‘আজকাল বলা হয়, সন্তানরা নাকি বয়স্ক মা-বাবাকে দেখেন না! কিন্তু আমাদের ছাত্রছাত্রীরাও তো সন্তানসম। তারা আমাদের নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে দেখে আমি খুবই আপ্লুত।’’ একই রকম উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল জগন্নাথের কণ্ঠে। বললেন, ‘‘শিশিরকুমার ভাদুড়ির অনেক কাজ আমরা দেখতে পাইনি। পরে শম্ভু মিত্রের কিছু কাজ দেখেছি। আসলে যে কোনও শিল্পীর কাজ এবং তাঁর ভাবনাকে সংরক্ষণ করাটা প্রয়োজন।’’ তবে পাশাপাশি ফুটে উঠল জমে থাকা আক্ষেপ। বললেন, ‘‘দীর্ঘ দিন নিজেদের শিল্প নিয়ে লড়াই করেছি। সমালোচনার সম্মুখীন হয়েও এগিয়ে গিয়েছি। উত্তর দিয়েছি কাজের মাধ্যমে। আজকে সত্যিই ভাল লাগছে।’’
তথ্যচিত্রটি প্রযোজনা করেছেন জগন্নাথ এবং ঊর্মিমালার দুই সংস্থা ‘উন্মেষ’ এবং ‘কথানদী’-র ছাত্রছাত্রীরা। কী ভাবে এই তথ্যচিত্রের ভাবনা? পলাশ বললেন, ‘‘ছোট থেকেই আমি আবৃত্তি করি। বুঝতে পেরেছি আবৃত্তি শিল্প বা বাচিক শিল্পের ইতিহাস নিয়ে সে রকম কোনও কাজ হয়নি।’’ এই ভাবনা থেকেই পার্থ ঘোষ এবং গৌরী ঘোষকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন পলাশ। সেই প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘‘চেয়েছি একটু অন্য ভাবে কাজটা করতে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাঁদের কথোপকথনের মাধ্যমে জীবনকে ফিরে দেখার চেষ্টা করেছি।’’ তথ্যচিত্রে দুই শিল্পীকে নিয়ে বলেছেন পবিত্র সরকার, জয় গোস্বামী, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিল্পীর পরিবারের সদস্যরা। তথ্যচিত্রটি প্রায় ছ’মাস ধরে তৈরি হয়েছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ‘যুগলেষু’-র তথ্যচিত্রটির প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রদর্শন।