নানা পটেকর।
ভারতীয় চলচ্চিত্রের একজন অত্যন্ত বলিষ্ঠ অভিনেতা নানা পটেকর। বিগত তিন দশক ধরে বলিউড তাঁর নানা ধরনের অভিনয় দেখে আসছে। কখনও তিনি তাঁর অভিনয়ে মানুষকে হাসিয়েছেন, কখনও বা কাঁদিয়েছেন, কখনও বা ভাবতে বাধ্য করেছেন আমাদের দৈনন্দিনের অনেক অবহেলিত বিষয় নিয়ে। তবে অন স্ক্রিন হোক বা অফ স্ক্রিন, তিনি আলাদাই। ইদানিং কালে বলিউডে তাঁর উপস্থিতি অনিয়মিত। কিন্তু দেশের অসংখ্য আম জনতার পাশে তিনি রয়েছেন বিগত ৩০ বছর ধরেই।
জানেন বিগত ৩০ বছর ধরে প্রতি মাসে নিজের উপার্জনের ৯০ শতাংশ মহারাষ্ট্রের গরিব মানুষদের দান করে চলেছেন নানা! পোশাক থেকে বাসস্থান— তাঁর জীবনযাত্রায় বিলাসিতার লেশমাত্র নেই। যাকে বলে একেবারে নিপাট সাদামাটা জীবন কাটাতেই ভালোবাসেন নানা। মুম্বইয়ের একটা সাধারণ ছোট অ্যাপার্টমেন্টে মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। যার বেডরুমের সংখ্যা মাত্র একটি।
মহারাষ্ট্র যে সময় খরার কবলে পড়ে এবং একের পর এক কৃষকের আত্মহত্যার খবর উঠে আসতে থাকে শিরোনামে, তখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন নানা। মরাঠাওয়াড়ায় গিয়ে ১১২টি কৃষক পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে প্রত্যেক পরিবারের হাতে তুলে দেন ১৫ হাজার টাকা।
শুধু মরাঠাওয়াড়া নয়, নাগপুর, লাটুর, হিঙ্গোলি, পারওয়ানির মতো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আরও ৭০০টি কৃষক পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন নানা। তাঁদের অর্থনৈতিক সঙ্কট মেটাবার চেষ্টা করেন নিজের সামর্থ অনুযায়ী। যে সব কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের স্বনির্ভর করে তুলতে বিভিন্ন ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন নানা। এ সব কাজ দেখভালের জন্য তাঁর একটা স্বেচ্ছাসেবি সংস্থাও রয়েছে তাঁর। এই সংস্থার মাধ্যমে এ যাবত্ ২২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে কৃষকদের সাহায্যের জন্য।
জানেন, জীবনের শুরুর দিকে উপার্জনের জন্য রাস্তায় ক্রসিং আঁকতেন নানা। প্রয়োজনে বলিউডের ছবির পোস্টার এঁকেও উপার্জনের চেষ্টা করেছেন তিনি। এ সব করে মাস গেলে হাতে আসত মেরে-কেটে ৩৫ টাকা!
আজ সাফল্যের শিখরে পৌঁছেও তিনি কিন্তু বদলে যাননি। তিনি আজও সেই মাটির মানুষ।
আরও পড়ুন...
‘দাবাং ৩’ থেকে বাদ গেলেন সোনাক্ষী!