আশঙ্কাকে অনেকটা সত্যি প্রমাণ করেই দ্বিতীয় পরীক্ষার দিনে নির্বাচন কমিশন যত গর্জেছিল তত বর্ষাল না। দিনভর বিভিন্ন জায়গা থেকে বোমা-বারুদ-রক্ত-হিংসা-সন্ত্রাস হুমকির নানা খবর আসতে থাকলেও দিনের শেষে নির্বাচন কমিশন জানাল, মোটের উপর শান্তিপূর্ণ থেকেছে সোমবারের ভোট। এটা সত্যি এ বারের নির্বাচন এখনও পর্যন্ত অনেকটাই কম রক্তাক্ত। সে দিক দিয়ে সাফল্যের দাবি অযথার্থ নয়। হিংসা কি শুধু রক্তেই দেখা যায়? বিহার, উত্তরপ্রদেশের থেকে একটি সম্পূর্ণ আলাদা পথ ধরে পশ্চিমবঙ্গ দীর্ঘ দিন ধরেই রক্তপাতহীন নির্বাচনী হিংসা দেখে এসেছে। সেই হিংসায় কোনও অস্ত্রের ঝনঝনানির দরকার পড়ে না। শুধু ভোটের আগের রাতে হিমশীতল কোনও এক কণ্ঠ গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিরোধী সমর্থকদের উদ্দেশে বলে আসে, ভোট দিতে যাওয়ার ফলটা ভাল হবে না। সেখানে সেই হিংসার ব্যতিক্রম ঘটল না এ বারেও।
বুথের মধ্যেই আধাসেনাকে আটকে না রেখে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বুটের যে দাপাদাপি কাঙ্ক্ষিত ছিল দ্বিতীয় পর্যায়েও পশ্চিমবঙ্গ তার সাক্ষী হল না। হল না বলেই নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী কেউই জানতে পারল না, বিনা রক্তে বিরাট হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে।
সূর্যকান্ত মিশ্রকে ঘিরে নারায়ণগড়ের বুথে বুথে তৃণমূল কংগ্রেসের পরিকল্পিত বিক্ষোভের মধ্যে হিংসার যে ছবিটুকু লুকোনো রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অব্যক্ত হিংসার কাহিনি আজ ছড়িয়ে রইল গ্রামের পর গ্রামে। নির্বাচন কমিশন যদি এই সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল না হয় তা হলে কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার হবে তাদেরই। বিরুদ্ধ কণ্ঠস্বর তাদেরই ওপর ভরসা রেখে উঠে দাঁড়াতে চেয়েছিল। নির্বাচন কমিশন কি পারবে সেই ভরসার মূল্য রাখতে?