আমাদের নিশ্চিত বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা বলেননি। আমাদের দৃঢ় ধারণা, রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা বলতে চাননি। আমাদের সংশয় নেই, ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তত্ত্বটায় বিশ্বাস করেন না।
এবং তাই, পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠ থেকে যা কিছু বেরিয়ে এল সেগুলো বিশ্বাস করতে এখনও খুব অস্বস্তি হচ্ছে। বিশেষত, গত দুই পর্বের নির্বাচনের পর, যে পুলিশ বাহিনী এখন নায়কের মর্যাদায় আসীন, প্রান্তিক মানুষের অধিকারটুকুকে বলিউডি ভঙ্গিমায় নিশ্চিত করলেন খাড়া-মেরুদণ্ডের যে অফিসার ও কর্মীরা, রাজ্যের সর্বাধিনায়ক তাঁদেরই শত্রু বলে চিহ্নিত করবেন কীভাবে? এ কোন কল্পরাজ্য, যেখানে নাগরিকের নিশ্চিন্ত নিদ্রা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রহরীকে কোপে পড়তে হয় রাজার! কোন দূর সত্যযুগের পর নগর প্রহরী দুবৃর্ত্তদের দূর হঠিয়ে নাগরিকের পথে ছড়িয়ে দিল সহস্র পুষ্পের দল। নগরাধিনায়কের কাছে মাত্র দু’টি পথই খোলা ছিল, এক, সত্যযুগের অনুরণনে প্রহরীকে অভিবাদন। অথবা, দুন্দুভিনাদে ওই প্রহরীর কোতল সমাচারের ঘোষণা, যা কিনা কলিকালেই সম্ভব ছিল।
শুরুতে সেই জন্যেই বলছিলাম, আমরা বিশ্বাস করি না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁরই পুলিশের উদ্দেশে এহেন সক্রোধ ঘোষণা করতে পারেন। আপাদমস্তক আচারনিষ্ঠ রাজানলের শরীরে প্রবেশ করবার জন্য কলির দরকার পড়েছিল ক্ষুদ্র খুঁতসম্পন্ন এক গোড়ালির। তারপরের পৌরাণিক ইতিহাস সবার জানা।
সাধু সাবধান। সত্য অথবা কলি, যুগ-নির্বিচারে বিপরীত বুদ্ধি কিন্তু বিনাশকালেই হয়।