Jute

West Bengal Election 2021: ভোটের আগে কল্পতরু! ফের পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়াতে চলেছে কেন্দ্র

কোভিড পরিস্থিতিতে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অভিযোগ ওঠে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। দুই দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ-সহ দেশের ৪০ লক্ষ পাট চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ১৬:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

ভোটে জেতালে নগদ টাকা ঢুকবে তাঁদের অ্যাকাউন্টে। নির্বাচনী প্রচারে এসে বাংলার কৃষকদের এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার আলাদা করে পাটচাষিদের মন জয় করতে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তার জন্য কাঁচা পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্র। খুব শীঘ্র মন্ত্রিসভায় এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে পারে। দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই একদফা আলোচনা হয়ে গিয়েছে। পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৬ থেকে ৭ শতাংশ বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা চলছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক কমিটি খুব শীঘ্র তাতে সিলমোহর দিতে চলেছে।

Advertisement

এর আগে, ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার ৯৫০ টাকা করা হয়েছিল। ২০২০-’২১ বর্ষে তা বাড়িয়ে ৪ হাজার ২২৫ টাকা করা হয়। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অভিযোগ ওঠে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। দুই দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ-সহ দেশের ৪০ লক্ষ পাট চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তার মধ্যেই সংসদে বিতর্কিত কৃষি আইন পাশ হয়। ওই আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের সুবিধা থেকে কৃষকদের বঞ্চিত করার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে গত ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির উপকণ্ঠে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।

তবে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে কৃষি আন্দোলনের আঁচ যতটা পড়েছে, বাংলায় সে ভাবে পরিস্থিতি তেতে উঠতে দেখা যায়নি। আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে দু’একটা মিছিল বেরলেও, প্রতিবাদ ব্যাপক আকার ধারণ করেনি। তাই বাংলায় ভোটের প্রচারে বার বার কৃষকদের খুশি করার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে বিজেপি-র মুখে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই বাংলার কৃষকদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে বলে বারংবার অভিযোগ করেছে তারা।

Advertisement

ফেব্রুয়ারি মাসে কোচবিহার সফরে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘মোদীজি বাংলার কৃষকদের জন্য একাধিক প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। দেশের সমস্ত কৃষক ৬ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। কিন্তু বাংলার কৃষকরা টাকা পাচ্ছেন না। মমতা দিদি আপনাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিচ্ছে না। বিজেপি-কে যদি ক্ষমতায় আনেন তা হলে অ্যাকাউন্টে মোট ১৮ হাজার টাকা ফেরত দেব।’’

তবে আলাদা করে পাটচাষিদের ‘পাখির চোখ’ করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। ২২ ফেব্রুয়ারি হুগলির ডানলপের সভায় জেলার পাটচাষি এবং পাটশিল্পের দুর্দশার কথা বার বার উঠে আসে তাঁর মুখে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, এক সময় বিহার থেকে হুগলির পাটশিল্প কারখানায় কাজ করতে আসতেন মানুষ। কিন্তু বর্তমানে বাংলার পাটশিল্প ধুঁকছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক কারখানা। দাম না পেয়ে পাট চাষ বন্ধ করে দিচ্ছেন চাষিরা।

মোদীর সেই ভাষণেই পাট চাষিদের কাছে টানার ইঙ্গিত ছিল। ফলে জল্পনা শুরু হয়। কারণ দেশের ৭০টি জুটমিলের মধ্যে ৬০টিই বাংলায় হুগলি নদীর দুই পাড়ে অবস্থিত। সেখানকার মোট কর্মী সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। তাই পাট চাষ এবং পাট শিল্পের সঙ্গে যে ভোটব্যাঙ্ক জড়িয়ে রয়েছে, এই মুহূর্তে বিজেপি সেটাকেই পকেটে পুরতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement