অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলার পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলার সঙ্গে সিবিআই কথাবার্তার কিছুক্ষণ আগেই ‘পারিবারিক অভিভাবক’ হিসাবে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘন্টা পর হুগলির রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তিনি রাজনৈতিক ভাবেও অভিষেক-রুজিরার পাশে দাঁড়ালেন। রুজিরার বাড়িতে সিবিআই অভিযানকে রাজ্যের মহিলাদের সম্মানের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে মমতা বললেন, ‘‘বিজেপি-র হাতে বাংলার মা-বোনেরাও নিরাপদ নয়! ঘরের বউকে কয়লাচোর বলছে! আমার বাড়িতে ঢুকে বউকে অপমান করেছে!’’
কয়লা-কাণ্ডে মঙ্গলবার রুজিরার সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। তার অব্যবহিত আগেই অভিষেকের বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতা। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরেই সেখানে পৌঁছয় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল। মমতা অভিষেকের বাড়িতে ঢোকা বা বেরোনর সময় কিছু বলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হয়েছিল, পরিবারের ‘অভিভাবক’ হিসাবেই তিনি গিয়েছিলেন। বুধবার হুগলিতে নরেন্দ্র মোদীর সভার জবাবি সভা থেকে ওই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ করেছেন মমতা। পারিবারিক ভূমিকা ছেড়ে বেরিয়ে এসে রুজিরার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি-র আমার উপর অনেক রাগ! আমায় মারতে পারেন। আমায় খুন করতে পারেন। কিন্তু বলুন তো মা-বোনেরা, মা-বোনেদের অসম্মান করতে পারেন? বাড়িতে গিয়ে একটা ২২-২৩ বছরের বাচ্চা মেয়ে, একটা বউ, একটা ঘরের কন্যা, তাকে কয়লাচোর বলছেন?’’
অর্থাৎ অভিষেক-জায়ার সঙ্গে সিবিআইয়ের কথাবার্তা যে শুধু রুজিরার নয়, গোটা বাংলার মহিলাদের অসম্মান, সেই আবেগ উস্কে দিতে চেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-র শাসনে যে মহিলারা নিরাপদ নন, সেটা তুলে ধরতে দর্শকদের দিকে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির নাম করে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি-র দলে যে সব মা-বোনেরা আছেন, তাঁরা সুরক্ষিত তো? উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতে মা-বোনেরা সুরক্ষিত তো? সুরক্ষিত না অরক্ষিত? না কুরক্ষিত?’’
কয়লা-কাণ্ডের জবাবে নোটবন্দি এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির অভিযোগে মোদীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা। চেয়েছেন জবাবও। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘নিজে তো কয়লাচোরদের কোলে তুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! লজ্জা করে না? এখন আমাদের বাড়ির মেয়েরা কয়লাচোর? আর তোমার সারা গায়ে তো ময়লা লেগে আছে! নোটবন্দির টাকা গেল কোথায়? নরেন্দ্র মোদী জবাব দাও।’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘কোল ইন্ডিয়া, রেল, সেল, বিএসএনএল বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে কেন? তার জবাব দিন প্রধানমন্ত্রী।’’
সেই প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের একটি হোটেলের কথাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা দুর্গাপুরে এলে বা সেখানে কোনও বড় কর্মসূচি থাকলে ওই হোটেল ভাড়া নেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সূত্রেই মমতার প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করুন, দুর্গাপুরের হোটেলটা পুরো ভাড়া নিয়েছে। হোটেলটা কার? কোন কোল মাফিয়ার। বিজেপি, নামটা বলব? তবে আমার মুখে এত ছোট নাম শোভা পায় না।’’