প্রতীকী ছবি।
বুধবার সন্ধ্যায় আরও এক দফা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল সংযুক্ত মোর্চার অন্যতম শরিক বাম। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর ঘোষিত সেই তালিকায় রয়েছে বীরভূমও।
বীরভূমের মোট ১১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে মুরারই, হাঁসন ও সিউড়ি জোটসঙ্গী কংগ্রেসের জন্য ছেড়েছেন বাম নেতৃত্ব। অন্য দিকে, ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রটি এসআইএফের জন্য ছাড়া হয়েছে। বীরভূমের যে সাতটি আসনে প্রার্থী ঘোষিত হয়েছে, তার মধ্যে তিন নতুন মুখ থাকলেও পোড়খাওয়া ও অভিজ্ঞ মুখের উপরেই ভরসা রেখেছে বামেরা। ফ্রন্টের তরফে জানানো হয়েছে, অভিজ্ঞতা এবং দলের প্রতি নিষ্ঠার সঙ্গে প্রার্থীদের স্বচ্ছ ভবমূর্তিকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রায় সব নেতাই এখন বিজেপিতে। ফলে, যে তৃণমূলের প্রতি বিরক্ত হয়ে মানুষ বিজেপির কথা ভেবেছিলেন, তাঁরাও দোলাচলে। এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে সংযুক্তা মোর্চাই একমাত্র বিকল্প। মানুষও সেটা বুঝেছেন।’’ তাঁর দাবি, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ মিলে মোর্চা তৈরির পর থেকেই জনসমর্থন বেড়ে চলেছে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়েছে সে কথা মাখায় রেখেই।
নলহাটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা বিধায়ক দীপক চট্টোপাধ্যায়। মুরারইয়ের চাতরা গ্রামের বাসিন্দা দীপকবাবু কেবল ফব-র জেলা সম্পাদকই নন, ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়কও বটে। একই ভাবে দুবরাজপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়ে অত্যন্ত পরিচিত ফব-র বিজয় বাগদিকে। সাধাসিধে বিজয়বাবু ২০১৬ সালে প্রথমবার পরাজিত হওয়ার আগে ছ’বারের বিধায়ক ছিলেন। দলবদলের হিড়িক ও নানা প্রলোভন সত্ত্বেও অন্য দলে নাম লেখাননি। তাই তাঁর প্রতিই আস্থা রেখেছে দল। অন্য দিকে বোলপুরের বর্ষীয়ান আরএসপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক তপন হোড়ের প্রতি আস্থা দেখিয়ে তাঁকেই ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করছে বাম।
জেলার নজরে থাকা আসন নানুরে এ বারও প্রার্থী হয়েছে গতবার সিপিএমের টিকিটে বিজয়ী প্রার্থী শ্যামলী প্রধানকে। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যা এবং গণতান্ত্রিত মহিলা সমিতির রাজ্য কমিটির ওই সদস্যার বাইরে ওই এলাকায় আরও অন্য কারও কথা ভাবা সম্ভব নয়— বলছেন এক সিপিএম নেতা।
তিন নতুন মুখ এ বারের প্রার্থী তালিকায়, যাঁরা এই প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়বেন। লাভপুরে প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ মহাফুজুল করিম। দলের কথায়, তিনি পরিচিত ও লড়াকু নেতা। সন্ত্রাসের ভয়ে ঘরছাড়া ছিলেন দীর্ঘদিন। রামপুরহাট থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সিপিএম নেতা সঞ্জীব বর্মন। যিনি ওই এলাকায় সংগঠন ধরে রাখার প্রতি একনিষ্ঠ। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা সঞ্জীববাবু বর্তমানে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও বটে। সাঁইথিয়া থেকে প্রাথী হয়েছেন তরুণ মুখ, সিপিএমের যুব সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য মৌসুমী কোনাই। তিনিও এলাকায় পরিচিত মুখ।
মনসা হাঁসদার কথায়, ‘‘প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রচার শুরু হয়েছে। তবে শুধু বাম প্রার্থী নয়, সংযুক্তা মোর্চার আরও দুই শরিক কংগ্রেস ও আইএসএফর জন্যও সমান ভাবে প্রচার চলছে।’’ সিউড়িতে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে।