প্রতীকী ছবি।
পশ্চিম বর্ধমানের ন’টি আসনের মধ্যে চারটি জোট শরিকদের জন্য ছেড়ে দিল বামেরা। বাকি পাঁচটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বামপ্রার্থীরা। বুধবার সিপিএম রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিনে বাম-প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।
গত বিধানসভা ভোটে বারাবনি বাদে শিল্পাঞ্চলের ওই তিনটি আসনে (আসানসোল উত্তর, দুর্গাপুর পশ্চিম এবং কুলটি) লড়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। এ বার ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’ (আইএসএফ) লড়বে আসানসোল (উত্তর) কেন্দ্রে। বারাবনি আসনটি সিপিএম ছেড়ে দিয়েছে কংগ্রেসকে।
আসানসোল (উত্তর) আসনটি পশ্চিম বর্ধমানের ‘তারকা-কেন্দ্র’ বলে পরিচিত। তৃণমূলের টিকিটে ওই আসনে লড়ছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। আসানসোল (উত্তর) কেন্দ্রের অন্তর্গত রেলপাড় অঞ্চলের ভোটারদের বড় অংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত। গত পুরসভা নির্বাচনে ওই এলাকা থেকে সিপিএমের টিকিটে জয়ী ওয়াসিমুল হক সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেন। সংখ্য়ালঘু ভোটব্যাঙ্কের পুরোটাই তৃণমূলের দখলে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসানোর লক্ষ্যেই ওই আসনটি আইএসএফ-কে ছাড়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের বড় অংশ। যদিও তৃণমূল নেতা ভি শিবদাসনের দাবি, ‘‘ওই আসনে জোটের হয়ে কোন দল লড়বে, তা নিয়ে তারা মোটেও চিন্তিত নয়।’’
বারাবনি কেন্দ্রে গতবার পরাজিত হয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী। গত পাঁচ বছরে বারাবনিতে বামদের সংগঠনে আরও ধস নেমেছে। ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের অবস্থা বামেদের তুলনায় ভাল। সেই কারণে বারাবনি আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
গতবার দুর্গাপুর (পশ্চিম) আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে ভোটে জিতেছিলেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। এ বার ভোটে তিনি ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। গত বারের জোট ফর্মুলা মোতাবেক এ বারও ওই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়েছে বামেরা। আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে সিপিএমর জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোথায় কে শক্তিশালী, কোথায় কে দুর্বল, তার ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগি হয়নি। নির্দিষ্ট নিয়মের ভিত্তিতেই আসন ভাগ হয়েছে। আমরা আজ থেকেই জোট সঙ্গীরা নির্বাচনী লড়াইয়ে
ঝাঁপিয়ে পড়েছি।’’
কংগ্রেস জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী জানান, আসানসোল (দক্ষিণ) আসনটি এ বার তাঁরা চেয়েছিলেন। যুক্তি হিসেবে বলা বলেছিল, দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে শিল্পাঞ্চলে। ইস্কোর প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক আইএনটিটিইউসি’র সদস্য বলে দাবি কংগ্রেসের। কংগ্রেসের দাবি মানেনি বামেরা। ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিএম। প্রার্থী ঘোষণার পরে এ নিয়ে আর কোনও বিতর্ক চাইছেন না দেবেশবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আসন ভাগ যখন হয়ে গিয়েছে, তখন এই সব ভেবে লাভ নেই। একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’’