প্রতীকী ছবি।
কোথাও দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন দেওয়ার তোড়জোড়। কোথাও প্রার্থী বদল না হলে ভোট দিতে না যাওয়ার হুমকি।
গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই বিজেপির একাংশে ঝড় উঠেছে। রবিবারই বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জরুরি সভা করে এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সোমবার মেদিনীপুরে জেলা নির্বাচনী দফতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। বিজেপি নেতা প্রদীপ লোধা এ দিন জানিয়েছেন, গড়বেতা কেন্দ্রের জন্য নির্দল হিসেবে মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন তিনি। শালবনি কেন্দ্রের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেন ধীমান কোলে। এ দিন এই কেন্দ্রের জন্য আরও দুই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা গোয়ালতোড়ের পশুপতি দেবসিংহ ও চন্দ্রকোনা রোডের দিলীপ চট্টোপাধ্যায় জেলা নির্বাচনী দফতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। চন্দ্রকোনা রোডে গেরুয়া শিবিরের কিছু কর্মী এ দিন জানিয়েছেন, শালবনি কেন্দ্রে ঘোষিত প্রার্থীর বদল না ঘটালে তাঁরা প্রচারেও নামবেন না, ভোট দিতেও যাবেন না। শোরগোলের মধ্যেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ঠিক করা গড়বেতার প্রার্থী মদন রুইদাস ও শালবনির প্রার্থী রাজীব কুণ্ডু মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
গড়বেতায় বিজেপির দুই নেতা প্রদীপ লোধা ও মদন রুইদাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব বরাবরই। গত বছর সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে কয়েকমাস আগে প্রদীপকে সরিয়ে মদনকে জেলার সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ বার বিধানসভা ভোটে গড়বেতা কেন্দ্রে মদনকে প্রার্থী করায় প্রদীপ ও তাঁর অনুগামীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারই জেরে গড়বেতা কেন্দ্রে ‘নির্দল’ হিসেবে প্রদীপের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তোড়জোড় বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘গড়বেতায় আমি বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে তিনি বহিরাগত। প্রকৃত বিজেপি কর্মীদের পক্ষ থেকে আমি নির্দল হিসাবে দাঁড়াব ঠিক করেছি।’’ শালবনি কেন্দ্রের জন্য রাজীব কুণ্ডুকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। চন্দ্রকোনা রোডের নয়াবসতের বাসিন্দা রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যা মানকুমারী ঘোষ-সহ আরও কয়েকজন এই কেন্দ্রে প্রার্থীর দৌড়ে ছিলেন। নয়াবসতের কয়েকজন বিজেপি কর্মী রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি লিখে শালবনি কেন্দ্রে দলের প্রার্থী বদলের আবেদন করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রার্থী বদল না হলে প্রচারেও নামবেন না, ভোট দিতেও যাবেন না। এদিন এই কেন্দ্রের জন্য জেলা নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষুব্ধ ৩ বিজেপি নেতা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের হয়ে জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি ধীমান কোলে বলেন, ‘‘কর্মীরা কিছুতেই মানছেন না দলের ঘোষিত প্রার্থীকে, তাই নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
যদিও এ সবে কান দিচ্ছে না জেলা বিজেপি। গড়বেতার প্রার্থী দলের জেলা সহ সভাপতি মদন রুইদাস বলেন, ‘‘শীর্ষ নেতৃত্ব সবটাই দেখছেন, সমাধান হয়ে যাবে। সকলের পরামর্শ- সহযোগিতা পাব, এটাই কামনা করি।’’