নিজস্ব চিত্র।
‘ঘরের ছেলে’ প্রার্থী হয়েছেন। সেই সঙ্গে ঘরোয়া কোন্দলও প্রকাশ্যে চলে এসেছে তৃণমূলের। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে এ বার প্রার্থী হয়েছেন ভূমিপূত্র খোকন দাস। যদিও তাঁর দাবি, কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নয়, দলের সকলেই এক হয়ে এ বারের নির্বাচনে ঝাঁপাবেন।
২০১১ এবং ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকেই তৃণমূলের টিকিটে লড়েছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। ২০১১ সালে তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভার সেকেণ্ড ইন কমান্ড নিরুপম সেনকে পরাজিত করে মন্ত্রী হন। তবে দ্বিতীয় বার শুধু বিধায়ক হিসেবেই ছিলেন। কোনও মন্ত্রিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি। যাতে তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বলেও শোনা যায়।
এ বার তাঁর জায়গায় টিকিট দেওয়া হয়েছে ‘ঘরের ছেলে’ খোকনকে। জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস। তিনি ছিলেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল। অভিযোগ, বলকমে খোকনের অঙ্গুলিহেলনেই পুরসভা চলত। তা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক সময় পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের সিংহভাগ কাউন্সিলর ছিলেন খোকনের অনুগামী। কিন্তু গত ছ’মাসে পরিস্থিতি একেবারে বদলে যায়। দলের একাংশের দাবি, নিজের শহরের কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন খোকন।
জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি বাসবিহারী হালদার, বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান আইনুল হকের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রার্থিতালিকা যখন ঘোষণা করা হল, তখন দেখা গেল বর্ধমান দক্ষিণ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে খোকনকে। তার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, গোষ্ঠীকোন্দল সামলে এই লড়াই জিততে পারবেন তো ‘ঘরের ছেলে’। যদিও খোকনের দাবি, কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব নেই। সবাই এক হয়ে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “ভোটের লড়াই একসঙ্গে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে সকলকেই জোট বেঁধে ভোট করতে হবে। এটা শুধু মুখের কথা নয়, আমাদের মনের কথাও।”
অন্য দিকে, রাসবিহারী বলেন, “তাঁর কাছে খোকন দাস এসেছিলেন। দিদির জন্য আমরা সবাই এক। ভোটের ময়দানে কোন দ্বন্দ্ব থাকবে না।’’ যাঁর হাত ধরে খোকনের উত্থান সেই পরেশ সরকারের গলাতেও একই সুর শোনা গিয়েছে।
কিন্তু লোকসভা ভোটের পর ঘাড়ের উপর নিশ্বাস ফেলছে বিজেপি। গত এক বছরে বিজেপির লোকবল বেড়েছে শহরে। গত লোকসভা নির্বাচনে শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে তৃণমূল হেরে আছে বিজেপি-র কাছে।