পুকুরপাড়ে এই গর্তেই বোমা মজুত ছিল বোমা। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার রাত্রে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটল। আটপাড়া এলাকায় একটি পুকুরের ধারে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। গত সেপ্টেম্বরে এই এলাকাতেই শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বোমা ফেটেছিল। ভোটের আগে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
যার বাড়ি লাগোয়া ওই এলাকা, সেই ফটিক শেখকে আটক করেছে পুলিশ। মজুত রাখা বোমা ফেটেই গলসি-১ নম্বর ব্লকের আটপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। সূত্রের খবর, ফটিকের বাড়ি লাগোয়া পুকুর পাড়ে একটি গর্তের মধ্যে বোমা মজুত রাখা হয়েছিল। তার উপরে চাপানো ছিল জ্বালানি কাঠ। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে। প্রচণ্ড শব্দে হকচকিয়ে যান গ্রামবাসীরা। বারুদের গন্ধে ভরে যায় গোটা এলাকা। পুকুর-সহ চারিদিকে ছিটকে পড়ে কাঠ। খবর পেয়ে গলসি থানার পুলিশ পৌঁছয় গ্রামে। রাত থেকে বিস্ফোরণস্থল ঘিরে রাখে পুলিশ। রাতেই ফটিককে আটক করা হয়। তবে ঠিক কতগুলি বোমা মজুত ছিল তা এখনও জানা যায়নি।
আটপুর গ্রামের বাসিন্দা সুতনু চৌধুরী সোমবার বলেন, ‘‘আমরা কয়েকজন গতরাতে বসে গল্প করছিলাম। তখনই এই ঘটনা ঘটে। বিরাট আওয়াজ হয়। আমরা আতঙ্কিত।’’ ভোটের আগে এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং-ও লেগেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজু পাত্র দাবি করেন, ধৃত ফটিক সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে ভয় দেখাতেই শাসকদল বোমার রাজনীতি করছে।’’ তাঁর দাবি, পঞ্চায়েতের টাকার বখরা নিয়ে ওই এলাকায় শাসকদলের অন্দরে গোলমাল আছে। গোটা জেলাতেই শাসকদল মানুষকে ভয় দেখাবার খেলায় নেমেছে।
বিজেপি-রঅভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল-সহ সভাপতি জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘ফটিক শেখ আমাদের কর্মীই নয়। তাকে আমরা চিনি না। সমর্থক হতে পারে। তৃণমূল বোমার রাজনীতি করে না। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কে দোষী। তৃণমূলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিক, সেটাই চাই আমরা। তৃণমূল না বিজেপি কে দায়ী, সেটা পুলিশ দেখছে। বিজেপি নেতাদের মিথ্যা অভিযোগ এখন প্রতিদিনের ঘটনা।’’
বিধানসভা ভোটের আগে এমন ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আটপুর গ্রামেই গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে ছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শৌচাগারের দেওয়াল এবং টিনের চালা ঘরটি কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সে বারেও মজুত বোমাতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার তদন্ত নামে সিআইডি। তবে সেই ঘটনায় আজও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। গত মাসে পূর্ব বর্ধমানের রসিকপুরে বোমা ফেটে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।