West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: কুম্ভ থেকে সভায় রাশ, এত বিলম্বে বোধোদয়ে প্রশ্ন

একই প্রধানমন্ত্রীকে গোটা দেশের জন্য এক নিয়ম আর পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর এক নিয়ম পালন করতে দেখে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ০৭:১৯
Share:

কুম্ভমেলায় পূণ্যার্থীরা। ছবি: পিটিআই।

Advertisement

কুম্ভমেলা প্রতীকী ভাবে পালন করা গেলে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচার কেন নয়! প্রবল সমালোচনার মুখে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারসভায় রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদীর দল। ঠিক হয়েছে, আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় সর্বাধিক পাঁচশো জন সমর্থক থাকবেন। বাকিদের ডিজিটাল মাধ্যমে দেখার সুযোগ করে দেবে দল।

শনিবার সকালে কুম্ভমেলা প্রতীকী অর্থে পালন করার ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই তিনিই শনিবার দুপুরে আসানসোলের জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘এমন ভিড় জীবদ্দশায় দেখিনি।’’ শনিবার রাতে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সেই মোদীকে বলতে শোনা যায়, করোনার প্রথম ধাক্কার মতোই দ্বিতীয় ঢেউকে সাফল্যের সঙ্গে সামলাতে হবে।

Advertisement

একই প্রধানমন্ত্রীকে গোটা দেশের জন্য এক নিয়ম আর পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর এক নিয়ম পালন করতে দেখে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের মতে, ক্ষমতার লোভে বিজেপি মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করছে। এদের কাছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যে কোনও দাম নেই তা অতিমারির আবহে একের পর এক জনসভা করা থেকেই স্পষ্ট। বিজেপি শিবিরের পাল্টা দাবি, করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতেই দল বড় মাপের সভা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা বিধি মেনে ডিজিটাল প্রচারে জোর দিয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এত দেরিতে কেন, তার কোনও জবাব নেই বিজেপির কাছে।

নিজেদের জনসভায় অনেক আগেই লাগাম দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বাম নেতৃত্ব। করোনার সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে প্রচারে না আসার সিদ্ধান্ত নেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তৃণমূল নেত্রীও বড় প্রচারসভা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। বিরোধীদের অভিযোগ, এতেও হুঁশ ফেরেনি বিজেপির। যার খেসারত আগামী দিনে দিতে হবে রাজ্যের মানুষকেই।

গোটা দেশে যখন করোনা রোগীর সংখ্যা সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে মোদী-শাহের আগ্রাসী প্রচার চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে দেশ জুড়েই। রাজ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য বহিরাগত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্য দিকে করোনা সংক্রমণ রুখতে হিমশিম খাওয়া মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে দফায় দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সুযোগ পাননি। পরে সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, যখনই ফোন করেছি, শুনেছি প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন।

এ ক্ষেত্রে ভোটের পরে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি যদি হাতের বাইরে চলে যায়, তখন প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বুঝতে পেরেই অবশেষে কিছুটা পিছোলেন বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যে এখনও তিন দফা ভোট বাকি। প্রধানমন্ত্রীর আরও চারটি জনসভা করার কথা ছিল। কী ভাবে তা হবে এবং আগামী দিনে বঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের কৌশল কী হবে ঠিক করতে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার নেতৃত্বে আজ বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতারা। দলীয় সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী শুক্রবারই পশ্চিমবঙ্গে চারটি সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভাগুলি খোলা জায়গায় হবে। সভায় কোভিডবিধি মেনে উপস্থিত থাকবেন কেবল পাঁচশো সমর্থক। সব জেলায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ডিজিটাল মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে দল।

ভোট প্রচারের শেষ দফায় ২৫-২৬ এপ্রিল বঙ্গে যাওয়ার কথা নড্ডার। তিনিও ভার্চুয়াল প্রচার চালাবেন বলে জানিয়েছে দল। জনসভা কম করে বাড়ি-বাড়ি প্রচারে জোর দেবে বিজেপি। একই সঙ্গে গোটা রাজ্যে ছয় কোটি মাস্ক ও হাতশুদ্ধি বিতরণের মাধ্যমেও প্রচারে কৌশল নিচ্ছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement