কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা বিধানসভা কেন্দ্রের নিশিগঞ্জে শুভেন্দু অধিকারীর সভা। শনিবার। ছবি: হিমাংশু রঞ্জন দেব
তাঁরা ক্ষমতায় এলে পরদিনই ইস্তফা দিতে হবে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের— কোচবিহারে দাঁড়িয়ে শনিবার ঠিক এই ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যা শোনার পরে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘‘ওরা (বিজেপি) এই ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে সবাইকে।’’
শনিবার কোচবিহারের দু’জায়গায় সভা করেন শুভেন্দু। প্রথমে মাথাভাঙার নিশিগঞ্জে, তার পরে দিনহাটায়। কোনও সভাতেই উপচে পড়া ভিড় ছিল না। এর মধ্যে দিনহাটার সংহতি ময়দানের সভা থেকে শুভেন্দু তৃণমূলের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা নাকি ধমক দিচ্ছেন। বলছেন, ভোট না দিলে দেখে নেব। ওদের বলবেন, ২ মে-র পরে ৩ তারিখে বিডিও অফিসে আর এসডিও অফিসে তোমাদের পদত্যাগ করতে হবে। যেমন ত্রিপুরায় বিজেপি আসার পরে সব পঞ্চায়েত সদস্যকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে পুরসভা, পঞ্চায়েতের ভোট করে জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে বিজেপি।”
জেলা তৃণমূলের তরফে শুভেন্দুর এই কথার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পার্থ বলেন, ‘‘এটা তো ভয় দেখিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা। এই ভাবে ভয় দেখানো কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে?’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার পরে ৯৮ শতাংশ পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল বিজেপি। উনি (শুভেন্দু) কি সেটাই মনে করিয়ে দিতে চাইলেন? তা ছাড়া, ক্ষমতা তো জনগণের হাতেই রয়েছে এখন।’’
এই দুই সভায় শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘একজনকে জয় শ্রীরাম বললে রেগে যান, আর এক জনকে তোলাবাজ ভাইপো বললে রেগে যান।’’ তার পরে তিনি দাবি করেন, কয়লা থেকে বালি, পাথর, গরু— যাবতীয় পাচারের পিছনে রয়েছেন ‘তোলাবাজ ভাইপো’। দিনহাটায় শুভেন্দুর মঞ্চে এ দিন ছিলেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী তথা কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামানিক।
ঘটনাচক্রে তৃণমূলে থাকাকালীন তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। যদিও দল ছাড়ার পরে তিনিও অভিষেককে নিশানা করেছেন।
পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিশ্বাসঘাতকদের কথা এখন আর কেউ শোনেন না। তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। তাই মিথ্যে কথা বলে আর কোনও লাভ
হবে না।”