প্রতীকী ছবি।
রাজনীতির কারবারিদের একাংশের দাবি, অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা না নেওয়ার জন্য এই পরিস্থিতি। সম্ভবত তার জেরেই সংযুক্ত মোর্চার জোটে জটিলতা শুধু শমসেরগঞ্জ আসনে।
জোটের প্রধান দুই অংশীদার বাম ও কংগ্রেসের আসন সমঝোতা নিয়ে স্থানীয় স্তরে নেতৃত্বের দফায় দফায় আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। আপাতত কংগ্রেস ও সিপিএম শমসেরগঞ্জে বিধানসভা ভোটে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ করতে পারে বলে দু’দল থেকে রবিবার ইঙ্গিত মিলেছে। আর সম্ভবত সেই কারণেই, গোটা শমসেরগঞ্জ এলাকা যখন তৃণমূলের দেওয়াল লিখনে ছয়লাপ, তখন একটিও দেওয়ালে বাম-কং জোটের প্রচার নিয়ে কিছু লেখা হয়নি। দু’দলের দখল করা দেওয়ালে এমনকি করা হয়নি চুনকামও। শমসেরগঞ্জ আসনে বিজেপি-র তেমন প্রভাব নেই। সেক্ষেত্রে বাম এবং কংগ্রেস আলাদা প্রার্থী দিয়ে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ করলে যে তৃণমূলেরই সুবিধা হবে, ঠারেঠোরে তা স্বীকারও করছেন দু’দলের নেতারা । কিন্তু সব জেনেও ‘রাজনৈতিক অস্তিত্বরক্ষার’ জন্য কংগ্রেস ও সিপিএম— কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ বলে খবর মিলেছে। জেলার ২১টি আসনে জোটের সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থী দিতে বাম এবং কংগ্রেস শিবির রাজি হলেও এখনও জট কাটেনি শমসেরগঞ্জ আসন নিয়ে। রফা সূত্র অনুযায়ী, জেলায় কংগ্রেসের লড়াই করার কথা ১৬টি আসনে। বাকি ৬টি আসন বামেদের। শমসেরগঞ্জ আসনটিতে ২০১৬ সালে তৃণমূলের কাছে ত্রিমুখী লড়াইয়ে মাত্র ১৭৮০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী। ২০১১ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট প্রার্থীকে ৭৭৮৯ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয় সিপিএম। তাই বামের দাবি, আসনটি এবার তাদেরই দেওয়া হোক। আবার ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শমসেরগঞ্জে বিধানসভাভিত্তিক ফলে অনেকটাই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। তাই ওই আসন চায় তারাও।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি হাবিবুর রহমানের কথায়, “লোকসভায় যারা কংগ্রেসকে ভোট দেয়, বিধানসভায় কংগ্রেস না থাকায় তারা সিপিএমের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ভোট দেয়। বহু চেষ্টা করেও ২০১৬ সালে ভোটারদের এই প্রবণতা বদলানো যায়নি। সেই কারণে তৃণমূলকে হারাতে শমসেরগঞ্জ আসনটি আমরা চেয়েছি বামের কাছে। কিন্তু আসন সমঝোতায় তারা তা মানতে রাজি হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের পথেই হাঁটা ছাড়া গতি নেই। যদিও এতে তৃণমূলের সুবিধাই হবে।” অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তোয়াব আলিও মানছেন, বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে তৃণমূলের লাভ হবে। তবে তিনি বলেন, “সেটা কখনওই হতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু শমসেরগঞ্জ কংগ্রেসকে ছাড়লে বামেদের বিকল্প আসন কোথায়? তাই বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের কথা উঠেছে। তবে আলোচনার দরজা এখনও বন্ধ হয়নি।”