পুলিশের সঙ্গে বচসার মুহূর্তে সায়নী ঘোষ। ছবি: পাপন চৌধুরী
মাই নেম এন মণ্ডল, নিত্যানন্দ মণ্ডল।’ উর্দির বুকে আঁটা ব্যাজ দেখিয়ে তর্জনী উঁচিয়ে এই মন্তব্য এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের। আঙুল তোলা হয়েছে যাঁর দিকে, তিনি আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। নিত্যানন্দের এমন বক্তব্য শুনে এক প্রবীণ ভোটারের মন্তব্য, ‘‘জেমস বন্ড না কি!’’ তবে সায়নীর পাল্টা, ‘ডোন্ট শাউট’।
তৃণমূল শিবিরের অভিযোগ, শান্তিনগরের একটি প্রাথমিক স্কুলের বাইরে থাকা তাদের ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেয় পুলিশ। পুলিশের দাবি, সেখানে অতিরিক্ত জমায়েত হয়েছিল। সায়নী সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী নিত্যানন্দের কাছে কেন অফিস ভাঙা হল জানতে চান। পুলিশকর্মীর উত্তর, ‘‘গ্যাদারিং...।’’ তবে সেই সঙ্গে সেখানে হাজির তৃণমূল কর্মীদের দেখে নিত্যানন্দের বক্তব্য, ‘‘এত জন কেন? আপনি প্রার্থী, একা কথা বলুন।’’ সায়নী কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে ওই পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘ওঁদের (জমায়েত) আগে খেদান। হাটান এখান থেকে। তার পরে, আপনার সঙ্গে কথা বলব।’’
সায়নী ইংরেজিতে ওই পুলিশকর্মীর নাম জানতে চাইলে দেন ওই জবাব। পরে নিত্যানন্দ বলেন, ‘‘আমি নির্বাচন কমিশনের কাজ করছি।’’ সায়নীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আপনারা দেখেছেন, ওই পুলিশকর্মীর ভূমিকা কী ছিল। গোলামের মতো ব্যবহার। এই মুহূর্তে কিছু বলার নেই। সব উত্তর ২ মে-র পরে উনি পাবেন।’’ দিনের শেষে তাঁর সংযোজন, ‘‘সাধারণ মানুষ উৎসবের মেজাজে ভোট দিয়েছেন।’’
টুপি হাতে অগ্নিমিত্রা পাল। নিজস্ব চিত্র
ওই একই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল কখনও ছুটেছেন রানিগঞ্জ খ্রিস্টান বালিকা বিদ্যালয়ের ‘জমায়েত’ সরাতে, কখনও বা বক্তারনগরে। বক্তারনগর হাইস্কুলের এক বুথে ঢুকে তৃণমূল এজেন্টের টুপি খুলে নেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সে টুপি দেখিয়ে অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করছে তৃণমূল।’’ পরে, রহমতনগরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ করেন বিজেপি প্রার্থী। কোনও অভিযোগই মানেনি তৃণমূল। ভোট ফুরোতে ‘‘মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন। অশান্তির চেষ্টা প্রতিহত করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী’’, দাবি অগ্নিমিত্রার।
ফেসবুক লাইভ করছেন ঐশী ঘোষ। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
পরিচয়পত্র দেখালেও কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁকে বুথে ঢুকতে দিচ্ছে না, জামুড়িয়ার শালডাঙায় এমনই অভিযোগ করেন সিপিএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ। ঘটনাস্থল থেকেই ‘ফেসবুক লাইভ’ করেন। অভিযোগ করেন, ‘‘জওয়ানেরা বলছেন, নিয়ম জানেন না। আশ্চর্যের বিষয়। ভোট করাতে এসেছেন, অথচ নিয়ম জানেন না!’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘বাধা দেওয়া হলে, আমরা রুখে দাঁড়াব।’’ জামুড়িয়ার মাঝিপাড়ায় ঐশী আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেন। দিনান্তে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি, তৃণমূল নানা জায়গায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করেছিল। মানুষ তা প্রতিহত করেছেন।’’