বাঁকুড়ার মহামায়া মন্দিরে তৃণমূল প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র।
‘দিদির হাত শক্ত করতে সকলের সহযোগিতা চাই’—মঙ্গলবার প্রচারে এসে দলীয় কর্মীদের এমন বার্তাই দিলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা-প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, সকলের ঘরের মেয়ে হয়ে ওঠাও তাঁর লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
বাঁকুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে সায়ন্তিকার নাম ঘোষণার পরে থেকেই বিরোধীদের পাশাপাশি, দলেরও একাংশ তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। বিষয়টি নজরে ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। যদিও এ দিন তার কোনও প্রভাব প্রার্থীর প্রচারে দেখা যায়নি। দুপুরে বাঁকুড়ায় ঢুকে মহামায়া মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে সায়ন্তিকা যান বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত তৃণমূল নেতা কাশীনাথ মিশ্রের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে কাশীনাথবাবুর স্ত্রী তথা বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক মিনতি মিশ্রের সঙ্গে দেখা করেন। শহরের দুই প্রয়াত তৃণমূল নেতা—দেবপ্রসাদ কুণ্ডু ও শান্তি সিংহের বাড়িতে গিয়েও তাঁদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
তাঁকে প্রার্থী করায় ক্ষোভ জানিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিদায়ী বিধায়ক শম্পা দরিপা। শম্পাদেবীর বাড়িতেও যাবেন কি না, সাংবাদিকদের সে প্রশ্নের জবাবে সায়ম্তিকা বলেন, “দিদির হাত শক্ত করতে সবার সাহায্য চাই। তাই ওঁরও সাহায্য লাগবে। উনি রাজনীতিতে আমার চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ। ওঁর সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করছি।”
শম্পাদেবী অবশ্য এ দিনও ক্ষোভের সুরে বলেন, “প্রার্থী বাঁকুড়ায় আসছেন, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। অথচ, আমাকে দল এক বারও ডাকার প্রয়োজন মনে করেনি।” যদিও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দিলীপ আগরওয়ালের দাবি, ‘‘প্রার্থী আসায় দলীয় কর্মীরা উৎসাহিত হয়ে নিজেরাই এসেছেন। কাউকে আলাদা করে ‘আমন্ত্রণ’ জানানো হয়নি।’’
শহরের যেখানেই সায়ন্তিকা এ দিন কর্মসূচিতে গিয়েছেন, তাঁকে দেখতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দিলীপবাবুও বলেন, “সায়ন্তিকা খুবই মিশুকে। ওকে দেখে বাঁকুড়ার মানুষও সেটা বুঝে গিয়েছেন।”
যদিও বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী নীলাদ্রিশেখর দানার দাবি, “তৃণমূলের চরিত্র বাঁকুড়ার মানুষ বুঝে গিয়েছেন। ওই তারকা-প্রার্থী বিধায়ক হলে, একটা শংসাপত্র পেতেও হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে। আর সেই সুযোগে ‘কাটমানি’ তুলবেন তৃণমূল নেতারা।” বাঁকুড়ার কংগ্রেস প্রার্থী রাধারানি বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “মানুষ তারকা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন। বাঁকুড়ার বিচক্ষণ ভোটারেরা কখনওই অভিনেত্রীকে বিধায়ক নির্বাচিত করবেন না।”
যদিও সায়ন্তিকা বলেন, “আমি প্রতিটি বাড়ির ঘরের মেয়ে হয়ে উঠতে চাই। অভিনেত্রী হিসেবে মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছি। এ বার বিধায়ক হিসেবে কাজ করে মানুষের ভালবাসা আদায় করব।’’ দল সূত্রে খবর, আজ, বুধবার বাঁকুড়া শহরে মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন সায়ন্তিকা।