বসিরহাটে প্রচাের দেব। মঙ্গলবার। ছবি: নির্মল বসু
কেউ বলছেন, হিন্দুকে সুরক্ষা দেবেন। কেউ বলছেন, মুসলিমদের সুরক্ষা দেবেন? তা হলে দেশকে সুরক্ষা কে দেবেন? প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব।
বসিরহাটের ভ্যাবলায় মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূলের তারকা-সাংসদ বললেন, ‘‘রাজনীতি বড্ড জটিল হয়ে গিয়েছে। দিদি যদি এই ২০২১-এ আমাকে প্রার্থী হতে বলতেন, আমি হতাম না!’’ কেন তাঁর মুখে এমন আক্ষেপ? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ। তাঁর মতে, ‘‘ভোট নেওয়ার জন্য হিন্দু নেতারা হিন্দুদের বলছেন, আপনারা সুরক্ষিত নন। আমাদের ভোট দিন, আমরা আপনাদের সুরক্ষা দেব। মুসলিম রাজনীতির নেতারা মুসলিমদের বলছেন, আপনারা সুরক্ষিত নন। আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা সুরক্ষা দেব।’’ দেবের সংযোজন, ‘‘আমার মাথায় আসছে না, এই দেশকে কারা সুরক্ষিত করবে! আসলে সুরক্ষা কারা দেবেন, তা না বলে নেতারা আপনাদের বোকা বানিয়ে কেবল ভোট নিয়ে যাচ্ছেন!’’
নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক বাতাবরণ জুড়ে যখন যুধুধান দুই শিবিরের তীব্র বিষোদগার চলছে, সেই সময়েই রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়েও নিজের প্রত্যাশার কথা এ দিন বলেছেন দেব। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, নিজেকে বড় করতে গেলে কখনও কাউকে ছোট করার প্রয়োজন হয় না। আমি মনে করি, আমরা আমাদের কিছু কাজের কথা বলব। বিরোধী দল তাদের কিছু কাজের কথা বলবে। যাকে যাঁর পছন্দ, তা মানুষই ঠিক করে নেবেন।’’ দেব মনে করিয়ে দিয়েছেন, মানুষ বেঁচে থাকলে তবেই ধর্ম, রাজ্য, রাজনীতি বেঁচে থাকবে। মন্দির-মসজিদ তৈরি করার জন্য নির্বাচন নয়। নির্বাচন মানুষের উন্নয়নের জন্য। কোন সরকার গরিব মানুষের জন্য কাজ করবে, তা বুঝে নিয়েই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেব। তাঁর এই বক্তব্যে বামপন্থী প্রার্থীদের কথার প্রতিধ্বনিই শুনতে পেয়েছেন অনেকে।
বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচারে এসে প্রত্যাশিত ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের পক্ষেও সওয়াল করেছেন দেব। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দিদি চেয়েছেন বাংলার সকল ছেলে-মেয়ে, বিশেষ করে গরিব পরিবারের সন্তানেরা যাতে পড়াশোনার সুযোগ পায়। গত ১০ বছরে সেই কাজ করে এসেছেন দিদি। কী ভাবে বাংলার মানুষ ভাল থাকতে পারে, তা দেখতে দিদি বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।’’ বিজেপির নাম না করেই তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘লকডাউনের সময়ে যখন লাখ লাখ মানুষ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন, শ্রমিকেরা যখন খাবার পাচ্ছিলেন না, তখন বিরোধী বন্ধুরা কোথায় ছিলেন? আসলে তখন নির্বাচন ছিল না তো! নির্বাচন থাকলে ঠিক ওই নেতারা চলে আসতেন!’’