ধৃত শেখ আউলিয়া ওরফে আলি। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান শহরের রসিকপুরে বোমা ফেটে ৭ বছরের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ আউলিয়া ওরফে আলি। রসিকপুরের মসজিদতলায় ধৃতের বাড়ি। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তারপর বর্ধমান থানায় এনে তাকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয়। তার উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে বলে খবর।
ধৃত আলি বোমার কারবারে জড়িত বলে পুলিশের দাবি। এর আগে অনেক বার সে রসিকপুর এলাকায় বোমা সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তাকে ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতকে ৩ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম সুজিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ির কাছেই খেলছিল শেখ আফরোজ ও তার আত্মীয় শেখ ইব্রাহিম (৮)। একটি সেলুনের উল্টোদিকে ভ্যাটের মধ্যে বলের মতো কিছু পড়ে থাকতে দেখে তারা। বল ভেবে আফরোজ সেটি কুড়াতে যায়। সেই সময় বোমা ফেটে আফরোজ ও ইব্রাহিম জখম হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আফরোজকে মৃত ঘোষণা করেন। ইব্রাহিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে আপাতত স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
মৃতের বাবা বাবলু শেখ অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এলাকার কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। বোমা পাচারে এর আগে ধৃত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার বয়ান নথিভুক্ত করে পুলিশ। তখনই আলির কথা জানা যায়। এর পরই তাকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এই বিষয়ে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘‘জানি না ও আসল অপরাধী কি না। ওই এলাকায় দুই তৃণমূল নেতা আব্দুল রব ও আসফারউদ্দিন বাবুর ঝামেলা দীর্ঘদিনের। তাদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট, বোমাবাজি হয়েছে বেশ কয়েক বার। এমনকি কোভিড সংক্রমণের সময়েও দুই তৃণমূল নেতা একে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। বোমাবাজি হয়। তাই প্রশ্ন উঠছে আসল সত্যকে আড়াল করতেই কি রাম-শ্যামকে ধরা হচ্ছে।’’
এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘ঘটনা খুবই দুঃখজনক। অপরাধীরা সাজা পেলে খুশি হব।’’