Suti

Bengal election: ভয় দেখানোর ‘প্যাকেজ’ নিয়ে সুতিতে দুষ্কৃতীরা

নাকা চেকিং কড়া থাকলে কেউ হেঁটে আসে গ্রামের ভিতরের রাস্তা দিয়ে। খেতের আল ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০৯
Share:

অস্ত্রধারী: সোমবার সুতির লক্ষ্মীপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

ভোটের দিন সোমবারের ভরদুপুর। সুতির লক্ষ্মীপুর, সিধৌরিতে হঠাৎ দেখা গেল হাতে দেশি বন্দুক উঁচিয়ে ঘুরছে কয়েক জন। কাছে যেতেই এক ছুটে পালিয়ে গেল দূরে। আবার খানিক দূরে কারও এক হাতে বন্দুক, এক হাতে দা। গ্রামের মানুষের জটলা থেকে খানিক দূরে দাঁড়িয়ে। মুখে গামছা, হাফ প্যান্ট। কিন্তু কাছে গেলেই দৌড়ে চলে যাচ্ছে দূরে।

Advertisement

কারা এরা? জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব অবশ্য বলেন, ‘‘পিস্তল নিয়ে দুষ্কৃতীদের আনাগোনার কোনও ঘটনা আমাদের সামনে আসেনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি কী ঘটেছে।’’

কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, পরিযায়ী পাখির মতো প্রতি ভোটেই প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তায় এদের দেখা মেলে। আগের দিন গভীর রাতে ঝাড়খণ্ড সীমানা থেকে মুর্শিদাবাদের সুতি, শমসেরগঞ্জে ছোট রাস্তা ধরে ছোট গাড়ি, কখনও মোটরবাইকে এরা ঢোকে সুতিতে। নাকা চেকিং কড়া থাকলে কেউ হেঁটে আসে গ্রামের ভিতরের রাস্তা দিয়ে। খেতের আল ধরে। ভোটের দিন বেলা একটু বাড়লেই সদর্পে তাদের ঘুরতে দেখা যায় বাংলা-ঝাড়খণ্ডের একেবারে সীমানার প্রত্যন্ত গ্রামগুলির ভিতরের রাস্তাগুলিতে।

Advertisement

স্থানীয় মানুষদের বক্তব্য, এই ট্র্যাডিশন বহু দিনের। সুতি, শামসেরগঞ্জের এই এলাকার মানুষ অত্যন্ত গরিব। প্রশাসনের নজরও কম। সেই সুযোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে নিয়ে আসে ভোটের দিন এলাকার বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে কোনও একটি দলের হয়ে ভোট করানোর জন্য। যদিও সব রাজনৈতিক দলই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের দাবি, এই এলাকায় ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীরা আসে বটে, কিন্তু প্রশাসন কড়া থাকায় এই দুষ্কৃতীরা তেমন ভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি সুজিত দাসও বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা এ বার শুধু
রাস্তায় ছিলেন তাই নয়, রাত পাহারাতেও ছিলেন। ফলে দুষ্কৃতীরা কিছু করতে পারেনি।’’

এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীদের এক একটি দলে সাধারণত থাকে পাঁচ থেকে সাত জন। এক লাখ, দেড় লাখ টাকায় ‘প্যাকেজ’। কাজ হল, গ্রামে গ্রামে ঘুরে হুমকি দেওয়া। ভোট শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে আবার লুকিয়ে ফিরে যায়। কেউ কেউ ঘুর পথে কয়েক দিন পরে ফেরে।

এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, সাম্প্রতিক অতীতেই সুতিতে বোমাবাজি, আগ্নেয়াস্ত্রের দাপট ছিল। সম্প্রতি নিমতিতা স্টেশনে বিদায়ী মন্ত্রী জাকির হোসেন স্টেশনে বিস্ফোরক নিয়ে হামলায় গুরুতর জখম হন। জাকির ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী এখনও চিকিৎসাধীন। সেই বিস্ফোরণের পরে নজরদারি বেড়েছে পুলিশের। তাতে বিস্ফোরক নিয়ে সুতিতে ঢোকার ঝুঁকি কেউ নিচ্ছে না। কিন্তু ভোটারদের চমকানো ধমকানোর জন্য এখনও পাশের রাজ্য বা জেলা থেকে দুষ্কৃতীরা আসছে। তবে এ বারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারির কারণে তেমন ভাবে গ্রামে গ্রামে ঢুকে ভয় দেখানোর সাহস পায়নি অচেনা দুষ্কৃতীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement