ফাইল চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরে ভোটের প্রচারে এসে বিজেপিকেই নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘লুট, দাঙ্গা, মানুষ খুন, বিজেপির তিন গুণ!’’ রাজবংশী-সহ বিভিন্ন অংশের মানুষের জন্য তাঁর সরকার যা যা কাজ করেছে, সে সব মাথায় রেখেই তৃণমূলকে ওই জেলা থেকে সব আসনে জেতানোর আবেদন জানিয়েছেন মমতা।
দু’বছর আগে লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জ আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। আর বিধানসভা ভোটে রায়গঞ্জ, হেমতাবাদের মতো আসন কোনও দিনই পায়নি তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনেও জেলার অধিকাংশ আসন জিতেছিল কংগ্রেস ও বাম। তার পরে তাঁদের কেউ কেউ দল বদলে তৃণমূল, কেউ বিজেপিতে গিয়েছেন। ষষ্ঠ দফার ভোটের প্রচারের শেষ দিনে সোমবার তৃণমূল নেত্রী ওই সব আসনেই তাঁদের জয়ী করার আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর আগের দিনের ঘোষণা মতো এ দিন হেমতাবাদে মিনিট দশেকের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্য সভাতেও বক্তৃতা ছিল সংক্ষিপ্ত।
মমতা বলেন, ‘‘হেমতাবাদ আমরা কোনও দিনও পাইনি। ইটাহার, রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, চোপড়া, করণদিঘি সব জেতান।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘রায়গঞ্জে কংগ্রেস বার বার জেতে। কিছু করে না। কংগ্রেস জিতে বিজেপিতে যাবে! এক বার আমাদের রায়গঞ্জ দিন।’’ হাত জোড় করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘বাংলা বাঁচাতে রায়গঞ্জ ভিক্ষে নয়, পাল্টে দিন।’’
সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিতে এক বন্ধনীতে বসিয়ে ‘জগাই, মাধাই, বিদাই’ বলে বিঁধেছেন মমতা। সেই সঙ্গেই সতর্ক করেছেন ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ও বিজেপির নানা ‘কারসাজি’র চেষ্টা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে বিজেপি ঝামেলা করাতে পারে। শান্তিপূর্ণ ভাবে ও ঠান্ডা মাথায় ভোট করবেন। ইভিএম মেশিন খারাপ হলে অপেক্ষা করবেন। মেশিন চালু হলে ৩০টা ভোট দেখে নেবেন। বিজেপি ইভিএম মেশিনে ভোট পুরে রাখতে পারে! আমাদের এজেন্ট যেন পালিয়ে না যায়। তা হলে আমি কিন্তু ছাড়ব না!’’
প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তিন মাস ধরে বাংলায় পড়ে আছেন, বাংলাকে গুজরাত বানানোর চেষ্টা করবে বিজেপি— এই অভিযোগও ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আহ্বান, বাড়ির দরজায় রেশন, স্বাস্থ্যসাথী, মাঝারি ও ক্ষুদ্র চাষিদের আর্থিক সাহায্য, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে মহিলাদের হাত খরচের টাকা— এমনই সব কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে তৃণমূলের সরকারকেই ফের নবান্নে ফেরাতে হবে।