বাবুল সুপ্রিয়,পার্থ চট্টোপাধ্যায়,যশ দাশগুপ্ত ও লাভলি মৈত্র।
রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে ৪৪টি আসনে ভোটগ্রহণ আগামী ১০ এপ্রিল, শনিবার। ওই ৪৪ আসনের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১১, হাওড়ায় ৯, হুগলিতে ১০, কোচবিহারে ৯ এবং আলিপুরদুয়ারের ৫টি আসন রয়েছে। বাংলায় প্রথম দফায় ৩০, দ্বিতীয় দফায় ৩০ এবং তৃতীয় দফায় ৩১ আসনে ভোট হয়েছে। তবে গত ৩ দফার তুলনায় চতুর্থ দফায় নজরে থাকা প্রার্থীর সংখ্যা একটু বেশিই।
চতুর্থ দফায় এক দিকে যেমন অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতির ময়দানে খেলতে নামা প্রার্থীরা রয়েছেন, অন্য দিকে তেমনই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদরাও লড়াই করছেন।
অরূপ বিশ্বাস ও বাবুল সুপ্রিয়: টালিগঞ্জে তৃণমূল ও বিজেপি— দু’দলের প্রার্থীই হেভিওয়েট। এক দিকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা টালিগঞ্জের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক অরূপ, অন্য দিকে আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল।
রত্না চট্টোপাধ্যায় ও পায়েল সরকার: বেহালা পূর্বেও এ বার জোর লড়াই। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় এ বার তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাঁর স্ত্রী রত্নাকে। অন্য দিকে, বিজেপি ঝঙ্কার তুলতে চেয়েছে টলিউডের পায়েলকে প্রার্থী করে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়: রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থর সঙ্গে পদ্ম-প্রার্থী শ্রাবন্তীর লড়াইয়ে জমজমাট বেহালা পশ্চিম। এক দিকে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। অন্য দিকে, প্রথম বার ভোটে দাঁড়ানো রুপোলি পর্দার নায়িকা।
মহম্মদ সেলিম ও যশ দাশগুপ্ত: প্রথম জন বর্ষীয়ান বাম নেতা। অন্য জন প্রথমে ছোট পর্দা ও পরে বড় পর্দা হয়ে রাজনীতিতে। হুগলির চণ্ডীতলায় এ বার লড়াই সিপিএম প্রার্থী সেলিম ও বিজেপি-র যশের মধ্যে।
লাভলি মৈত্র ও অঞ্জনা বসু: রুপোলি পর্দার দুই পরিচিত মুখের মুখোমুখি লড়াই সোনারপুর দক্ষিণে। লাভলি তৃণমূলের, বিজেপি-র প্রার্থী অঞ্জনা।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সর্বত্র যে দুই প্রার্থীই নামজাদা, তেমনটা নয়। যেমন হাওড়ার শিবপুর। গত বছর পর্যন্ত ক্রিকেট ব্যাট হাতে দেখা যেত যে মনোজ তিওয়ারিকে (বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক), এ বার কিন্তু তাঁকে হাতে জোড়াফুল নিয়ে ভোটে লড়তে দেখা যাচ্ছে। একই রকম ভাবে বাংলা তথা ভারতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবল তারকা বিদেশ বসু এই দফায় হাওড়ার উলুবেড়িয়া পূর্বে জোড়াফুলের ভোটপ্রার্থী।
সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন রাজনীতিতে অনেক দিনই। চন্দননগরের বিদায়ী বিধায়ক এ বারও সেখান থেকে তৃণমূলের প্রার্থী। রাজ্যের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়াই বিজেপি-র রাজ্য নেতা দীপাঞ্জন গুহর। হুগলিরই উত্তরপাড়ায় এ বার তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক। বাংলার পরিচিত কমেডিয়ান এ বার ‘সিরিয়াস’ ভূমিকায়।
রাজ্য রাজনীতিতে খ্যাতি রয়েছে এমন আরও কয়েক জন প্রার্থীর দিকে নজর থাকবে চতুর্থ দফার ভোটে। এর মধ্যে যেমন আছেন সিঙ্গুরের বেচারাম মান্না, তেমনই রয়েছেন বালিতে বৈশালী ডালমিয়া। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে এই আসন থেকেই তৃণমূলের টিকিটে জেতা বৈশালী এ বার পদ্ম-প্রার্থী। চুঁচুড়ায় নজর থাকবে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের উপরে। রুপোলি পর্দার নায়িকা নন, হুগলির সাংসদ লকেট এখন পুরোদস্তুর রাজনীতিক। এ বার নীলবাড়ির লড়াইয়ে তিনিও প্রার্থী।
রাজনীতিক হিসেবে আরও দুই ওজনদার প্রার্থী আছেন চতুর্থ দফায়। আব্দুল মান্নান এবং সুজন চক্রবর্তী। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মান্নান লড়ছেন হুগলির চাঁপদানি থেকে আর সুজনের লড়াই যাদবপুরে। ২০১৬ সালে এই দুই আসন থেকেই জয় পেয়েছিলেন মান্নান-সুজন। এ ছাড়াও নজরে থাকবে হাওড়ার ডোমজুড়। সেখানে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।