রুদ্রনীল ঘোষ।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের তুলনা। বিপরীতে দীর্ঘদিনের ‘রাজনৈতিক বন্ধু’ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হারার ভয়ে নিজের ঘর ছেড়ে পালালেন! ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী হয়ে আরও আক্রমণাত্মক রুদ্রনীল ঘোষ।
প্রশ্ন: হাওড়ার ছেলে ভবানীপুরের প্রার্থী। এটা আপনার পক্ষে প্লাস পয়েন্ট না মাইনাস পয়েন্ট?
রদ্রনীল: ব্যবস্থাটা অনেকটাই, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যেমন লর্ডসে, তেমনই আমি এখানে। আমার তো তেমনই মনে হচ্ছে।
প্রশ্ন: বিপরীতে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, ট্রোল আর মিমের বন্যা সামলাতে আপনি তৈরি?
রুদ্রনীল: আমি বলব, ভবানীপুরের মানুষ তৈরি। যে ভাবে শোভনবাবুর যত্নে তৈরি করা রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে ওঁকে তুলে নিয়ে এসে এখানে দাঁড় করানো হল। এই কেন্দ্রের অবস্থা তো ‘দিদি’ নিজের হাতে খারাপ করে দিয়েছেন। হেরে যাবেন নিশ্চিত জেনে উনি সেই কেন্দ্র ছেড়ে পালালেন। বিষপান করতে পাঠিয়ে দিলেন ভাল মানুষ, নিপাট ভদ্রলোককে! যিনি কম কথা বলেন। শরীরও অসুস্থ। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বন্ধু আমার। খুব খারাপ লাগছে। শোভনদেবও যে কেন কিছু বললেন না! একটা প্রতিবাদ করা দরকার ছিল। শাসকদলে ওঁর ভূমিকা আজও অনস্বীকার্য।
প্রশ্ন: কী কী হোমওয়ার্ক করছেন এখন?
রুদ্রনীল: আমার তো কোনও হোমওয়ার্ক লাগে না! আমি শুরু থেকেই অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির ছাত্র। তাই যা দেখি সেটাই তুলে ধরি সাধারণের সামনে। মুখ্যমন্ত্রী যাঁদের সঙ্গে সারাক্ষণ ওঠা বসা করেন, ‘এই অমুক শোন’, ‘এই তমুক শোন’ বলে ডাকেন তাঁদের তো কই দিলেন না ওই সিট! সুইসাইড করার জন্য। দিয়ে দিলেন শোভনদেবকে। দেখে কষ্ট হচ্ছে আমার। আমি নিমিত্ত মাত্র। এখানে জিততে গেরুয়া দলই যথেষ্ট।
প্রশ্ন: মহানায়কের এলাকায় কী কী সমস্যা জানেন?
রুদ্রনীল: একাধিক সমস্যা আছে, শুনেছি। নতুন করে আরও কিছু তৈরি হয়েছে। যেমন, ভবানীপুরে জলের সমস্যা মারাত্মক। ড্রেনেজ সিস্টেমেও বড় সমস্যা রয়েছে। বৃষ্টি পড়লেই জল দাঁড়িয়ে যায় বেশ কিছু জায়গায়। ভবানীপুরের একটা অংশে মাঝারি এবং বড় ব্যবসায়ীদের কর্মস্থান। রাজ্য কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভর করেই চলে। সেখানে তাঁরা ব্যবসা করতে পারছেন না তোলাবাজির দাপটে। চাকরির কথা ছেড়েই দিন। চাইলেই মার খেতে হবে নয়তো মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলিয়ে দেওয়া হবে। একটা পরিবারকে চাকরি দিতে পারবে না বলে বাচ্চাকে ১০ হাজার টাকার ট্যাব কিনে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে মা-বাবার ২টো ভোট শাসকদলের পক্ষে আসে। আর কত সমস্যার কথা বলব? এ বার নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুনব আর কী কী সমস্যা আছে।
প্রশ্ন: জিতে ফিরলে আপনার থেকে কী কাজ পাবে এলাকাবাসী?
রুদ্রনীল: এলাকাবাসীর বেশির ভাগ মানুষ যে সমস্যার কথা একজোট হয়ে জানাবেন সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব সবার আগে।
প্রশ্ন: ভোট টানতে আপনার স্ট্র্যাটেজি কী?
রুদ্রনীল: ভবানীপুরের মানুষের হয়ে সত্যি কথা বলা, এটাই আমার স্ট্র্যাটেজি। তাঁরা যে বঞ্চিত হয়েছেন, ঠকেছেন, তাঁদের ভয়েই মুখ্যমন্ত্রী নিজের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন--- জানাব সবাইকে। বোঝাব, নতুন বাড়িতেও একই জিনিস করবেন তিনি।
প্রশ্ন: কবে থেকে প্রচারে বেরোচ্ছেন?
রুদ্রনীল: আমার ইচ্ছে আগামী কাল থেকে। বাকিটা দল ঠিক করবে। আমরা দলের নির্দেশ মেনে চলি। এই দলে নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ করা যায় না।
প্রশ্ন: মিঠুন চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে তাঁদের অভিনীত ছবির জনপ্রিয় সংলাপ বলছেন। ভাষণে আপনি কী বলবেন?
রুদ্রনীল: মিঠুন চক্রবর্তীর সংলাপ লোকমুখে জনপ্রিয়। সায়ন্তিকা নিজের মুখের কোন সংলাপ বলেছেন, জানি না। আমি বলব, ভবানীপুরের মানুষ ভবানীপুরের আসন বিজেপিকে দেবে সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা, তৃণমূলকে কত ভোটে ভবানীপুরের মানুষ হারাবেন?
প্রশ্ন: যিশু সেনগুপ্ত যোগ দিচ্ছেন বিজেপি-তে?
রুদ্রনীল: সাধারণ মানুষ যেমন চুরি-ডাকাতি দেখছেন, টালিগঞ্জে দাদাগিরি দেখছেন যিশুও তেমনি দেখছেন। যিশুও বাংলার ভাল চান। উনিও চান না এগুলো হোক। কিছু মানুষ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসছেন এর বিরোধিতা করতে। কিছু মানুষ ভোটবাক্সে উত্তর দেবেন। অনেকেই লেখালেখির মাধ্যমে মনের কথা জানাচ্ছেন। যিশু পরিণতবয়স্ক এবং পরিণতমনস্ক। কোন পথে পা বাড়াবেন সেটা উনিই ভাল বলতে পারবেন।
প্রশ্ন: নিজের দলে, বিরোধী পক্ষে একাধিক বন্ধু অভিনেতা প্রার্থী। কী বার্তা দেবেন?
রুদ্রনীল: আন্তরিক ভাবে দলীয় অভিনেতা বন্ধুদের জয় কামনা করছি। বিরোধী পক্ষের মঙ্গল হোক।