জুন মালিয়ার এই হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিনশট ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সদ্য শেষ হয়েছে। এই দফায় অনেকেরই নজর ছিল মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। কারণ এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে। নির্বাচনের আগে জোর কদমে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার পরে পরেই কর্মী ও সাংবাদিকদের নিয়ে তৈরি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মুছে ফেলার নির্দেশ দিলেন তিনি। আর এই ঘটনায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সম্প্রতি ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের একটি স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। যদিও ওই স্ক্রিনশটের সত্যতা আনন্দবাজার ডিজিটাল যাচাই করেনি। সেই স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, জুন একটি মেসেজ বলেছেন, ‘এই সুন্দর যাত্রার জন্য সবাইকে শুভেচ্ছা। সবার প্রচেষ্টা ছাড়া এই কঠিন কাজ সম্ভব হত না। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ রাখার জন্য।’ তারপরেই জুন লেখেন, ‘আমি এই গ্রুপটি মুছে ফেলতে বলছি। কারণ প্রচারের উদ্দেশ্যে এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল এবং সেটি মিটে গেছে।’
এই স্ক্রিনশট ভাইরাল হওয়ার পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভোটগ্রহণের পরেই এ ভাবে প্রার্থীর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মুছে ফেলার কথাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতি শুভজিৎ রায় বলেন, ‘‘উনি বুদ্ধিমতীর মতো কাজ করেছেন। উনি মেদিনীপুরে ভোট দাঁড়াতে এসেছিলেন, রাজনীতি করতে নয়। ভোট মিটে গিয়েছে। হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে গিয়েছেন। এখন আর ওই গ্রুপ রাখার দরকার কী। উনি যদি এক শতাংশও আশা করতেন যে জেতার সম্ভাবনা আছে, তাহলে অন্তত গণনার দিন পর্যন্ত গ্রুপ রাখতেন।’’
অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘উনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন কি না, এমন কোনও খবর আমার জানা নেই। তবে এ টুকু বলতে পারি, নিজের কেন্দ্রে ভোট মিটে যাওয়ার পরেও ওঁকে নন্দীগ্রাম-সহ বাংলার অন্যান্য কেন্দ্রে প্রচারে যেতে হবে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।’’
রুপোলি পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নির্বাচনে জিতে সাংসদ-বিধায়ক হওয়ার উদাহরণ অনেক রয়েছে। ভোটে জেতার পরে অনেকের দেখা পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ উঠেছে অনেক বার। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও এমন অভিযোগ কম নেই। মুনমুন সেন থেকে শুরু করে সন্ধ্যা রায়, অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল তাঁরা ভোটে জেতার পরে আর নিজেদের কেন্দ্রে সেভাবে যাননি। আর এ বার ভোটগ্রহণের পরেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মুছে ফেলার কথা বলে ফের একবার সেই বিতর্ককেই চাগিয়ে তুললেন জুন। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তারকা প্রার্থীরা কি তাহলে শুধু ভোটে দাঁড়ানোর জন্যই রাজনীতিতে আসেন। মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করার ইচ্ছা কি তাঁদের থাকে না। নইলে ভোট মিটতেই কেন এ ভাবে গ্রুপ মুছতে বললেন জুন।