গাছ ঢেকেছে পতাকায়।
ভোটের ফলাফল যাই হোক না কেন বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের প্রচারে পতাকার লড়াই চলছে তৃণমূল আর বিজেপি’র। জোড়া ফুল আর পদ্ম ফুলের পতাকায় ছেয়েছে শহর বহরমপুর তো বটেই বাদ নেই পঞ্চায়েতও। ভোট রণক্ষেত্রে দুই দল যুযুধান দুই শিবিরে অবস্থান করলেও তাদের পতাকার সহাবস্থান অবশ্য শহরের একাধিক অলিগলিতেই নজরে পড়ছে। তুলনায় বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে কংগ্রেস। যা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যেও জোর আলোচনা চলছে বহরমপুরে।
তবে এই প্রচার এবারের ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলবে বলে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকরা মনে করলেও তাকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছেন না কংগ্রেসের সমর্থকরা।
পঞ্চম দফার নির্বাচন মিটে গিয়েছে মাঝে আর এক দফা শেষে এগারো দিনের মাথায় বহরমপুর সহ জেলার ১১টি বিধানসভার নির্বাচন। ইতিমধ্যে ভোটপ্রচারে নেমেছে সব কটি রাজনৈতিক দলই। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, সেই ভোট প্রচারে সবচেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। দলীয় পতাকায় আর প্রার্থী নাড়ুগোপালের ফ্লেক্স, ব্যানারে ভরেছে শহরের অলিগলি। শহরবাসীর কেউ কেউ মজা করে বলছেন “ ঘাসফুলে শহর ভরে গিয়েছে।” শুধু পতাকায় নয় দেওয়াল লিখনেও এগিয়ে নাড়ুগোপাল। তবে দেরিতে শুরু করেও নাড়ুর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি’র সুব্রত মৈত্র ওরফে কাঞ্চন। কাঞ্চনের পদ্মফুলেরও বাড় বাড়ন্ত শহরের অলিতে গলিতে।
তুলনায় কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী পতাকা প্রচারে কিংবা দেওয়াল লিখনে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন বহরমপুরে। মনোজ সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হওয়ায় এবার বামেদের লাল নিশান তাঁরই সমর্থনে প্রচার চালাচ্ছে বহরমপুর বিধানসভায়। প্রচারের ময়দানে তারাও পিছিয়ে অনেক। কংগ্রেসের শহর সভাপতি কার্তিক সাহা বলছেন “ওই দুই দলের দুই প্রার্থীই নতুন। মানুষ ওদেরকে ঠিকমত চেনেই না। আর আমাদের প্রার্থী তিনবারের বিধায়ক। তাঁর কাটমানি ছাঁটমানি নেই। যতটা প্রয়োজন ততটা প্রচার আমাদেরও হচ্ছে।” কার্তিক সে কথা বললেও কংগ্রেসের হয়ে পতাকা টাঙানোর লোক নেই বলে কটাক্ষ করছেন বিজেপি ও তৃণমূলের প্রার্থীরা। নাড়ুগোপাল বলেন, “বহরমপুরে পতাকা টাঙিয়েছে আমাদের সংগঠনের ছেলেরা। তারাই উৎসাহিত হয়ে এসব করেছে।” তবে কংগ্রেসকে খোঁটা দিয়ে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিনের কংগ্রেসী রাজত্বে মানুষ বীতশ্রদ্ধ তাই স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে সাধারণ মানুষ পথে নেমে পরিবর্তন চাইতে তৃণমূলের পতাকায় শহর ভরিয়েছে।” বিজেপির বহরমপুর বিধানসভার পর্যবেক্ষক সোমনাথ মাহান্ত বলেন, “কংগ্রেসের পতাকা টাঙানোর লোক নেই। আর তৃণমূল সরকারে আছে ফলে ওদের কিছু লোক আছে। আমরা দু’টোর কোনটাতেই নেই। মানুষের মনে থাকায় বহরমপুর এবার বিজেপি’র পতাকায় ভরে গিয়েছে। আর সেই পতাকা দেখেই মানুষ বুঝতে পারছে এখানে আমরা কতটা শক্তিশালী।” সাংসদ অধীর চৌধুরী অবশ্য বহরমপুরের আনাচে কানাচে যে পথসভা করছেন সেখানে বলছেন, “ চেনা বামুনের পৈতা লাগে না। আমরা আপনাদের ঘরের রাখাল। আমাদের নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই। তবে এলাকার মানুষ আমাদের ভালবাসেন তাই বলবো আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আমরা আপনাদের বিভ্রান্ত করি না।”