বোলপুরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে বিজেপি-কর্মী সমর্থকেরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
জেলায় মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপির প্রার্থীরা। সিউড়ি, রামপুরহাট ও বোলপুরের প্রশাসনিক ভবনে শোভাযাত্রা করে দিয়ে তাঁরা মনোনয়ন জমা দেন। মঙ্গলবার এই উপলক্ষে কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
সিউড়ি
শোভাযাত্রা করে এ দিন সকালে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অনুপ সাহা, সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পিয়া সাহা এবং ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শ্যামাপদ মণ্ডল। জেলার নেতা নেত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি। তাঁকে দেখতে বিজেপি কর্মীদের ভিড় ছিল ভালই। এ দিন হেলিকপ্টার থেকে স্মৃতি নামার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে থাকেন। সিউড়ির বেণীমাধব মোড় থেকে বড়বাগান একের পল্লি হয়ে পুলিশ লাইন পর্যন্ত মিছিল করেন স্মৃতি। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের গুণ্ডারা মানুষকে হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু আমি নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাব শান্তিপূর্ণ এই ভোট পরিচালনার জন্য। আমি কথা দিচ্ছি বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে এই ধরনের গুণ্ডাদের জেলে ঢোকানো হবে।’’ জেলা শাসকের দফতর চত্ত্বরে ১৪৪ ধারা ছিল। কিন্তু সেখানে অনেক বিজেপি কর্মী ভিড় করেছিলেন। যদিও পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়।
রামপুরহাট
সকাল এগারোটা। তখনও দিল্লির সাংসদ মনোজ তিওয়ারির কপ্টার তারাপীঠ ঢোকার মুখে চিলার কাঁদরে হেলিপ্যাডে নামে নি। চিলার মাঠে অপেক্ষা করছেন দলের রামপুরহাট, হাঁসন, নলহাটি এবং মুরারই চার বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা। চার বিধানসভা কেন্দ্রের হাজার তিনেকের বেশি কর্মী জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট সানঘাটাকালী মন্দিরে তাদের নিজ নিজ এলাকার দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার শোভাযাত্রায় যোগ দিতে হাজির হয়েছেন। ‘ভাল সময়’ মেনে বারোটার আগে মনোনয়ন দেবেন বলে বিজেপি প্রার্থীরা মনোজ তিওয়ারির অপেক্ষা না করে রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের দিকে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যান। দলীয় কর্মীরা কালী মন্দিরে থেকে যান। বেলা বারোটার কিছুক্ষণ পরে মনোজ তিওয়ারিকে নিয়ে র্যালি শুরু হতেই বিজেপি কর্মীরা উচ্ছাসে ফেটে পড়লেন। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে পারেননি তাঁরা। এ বারের বিধানসভা নির্বাচন তাদের কাছে তাই ধর্মযুদ্ধ। মনোজ তিওয়ারি কে নিয়ে র্যালি রামপুরহাট শহরে ঢকতেই রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শুভাশিস চৌধুরী রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে র্যালিতে যোগ দেন। রামপুরহাট মহাজন পট্টি মোড়, কামারপট্টি মোড়, দেশবন্ধু রোড ধরে র্যালি শহরের পাঁচ মাথা মোড়ে শেষ হয়।
বোলপুর
সিউড়ি, রামপুরহাটের পাশাপাশি এ দিন বোলপুর মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিজেপি প্রার্থীরা। মনোনয়ন জমা ঘিরে এ দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বোলপুর আসার থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শোভাযাত্রা বোলপুর রেল ময়দান থেকে বেরিয়ে শহর পরিক্রমা করে বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে এসে জমা হয়। সেখানেই এদিন মনোয়নপত্র জমা করেন বোলপুর কেন্দ্রের প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়, নানুরের প্রার্থী তারক সাহা ও লাভপুরের বিশ্বজিৎ মণ্ডল। মনোনয়নপত্র জমা ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বোলপুর প্রশাসনিক ভবন চত্বরে ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দূরত্বে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সোমবার তৃণমূলের মতো এ দিনও বিজেপির মনোনয়নে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা থেকে শয়ে শয়ে মানুষ সেই দুটি বেড়া টপকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলে আসেন বলে অভিযোগ। তবে বিজেপি নেতারা তা মানেননি। বিজেপির মিছিলে বেশ কয়েকজনের হাতে বাঁশ, লাঠিও দেখা যায় বলে অভিযোগ। বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমরা কোনও নিয়ম ভাঙি না, অথচ এখানে আমাদের কর্মীদের মাথা ভাঙা হয়।’’