ভবানীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী শাদাব খানের প্রচারে এআইসিসি নেতা বি কে হরিপ্রসাদ ও বি পি সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে ভোটের প্রচারে বড় কর্মসূচিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত প্রথম নিয়েছিল তারাই। এ বার ‘বিকল্প মাধ্যমে প্রচার’ও প্রথম শুরু করে দিল সিপিএম।
মাঠে-ময়দানে প্রচার পুরোপুরি বন্ধ করেনি কোনও দলই। আকারে ছোট করে আনলেও বামেদের রাজ্য নেতারা সভা-সমাবেশে যাচ্ছেন। তারই পাশাপাশি সিপিএম শুরু করেছে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিকল্প মাধ্যমে বিকল্পের কথা’। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তৃতা দিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকে ওই কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি রাতেই সিপিএমের এক জন করে নেতা সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে তাঁদের কথা বলবেন, ফেসবুক লাইভে যার সম্প্রচার হবে। দেখা যাবে ইউ টিউবেও। সপ্তম দফার ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চারটি সভা আছে, যেখানে জমায়েত সীমাবদ্ধ করার কথা বলেছে বিজেপি। তার পরে মোদীরও ভার্চুয়াল প্রচারে আসার কথা। সেই কাজ আগেই শুরু করে দিল বামেরা।
সূর্যবাবু, মহম্মদ সেলিম, শমীক লাহিড়ীর মতো প্রতিষ্ঠিত নেতাদের পাশাপাশি দলের তরুণ ও নবীন প্রজন্মের মুখেদেরও এই বিকল্প প্রচারে কাজে লাগাচ্ছে সিপিএম। যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক এবং কামারহাটির প্রার্থী সায়নদীপ মিত্র এবং বর্ধমান দক্ষিণের তরুণী প্রার্থী তথা নিহত প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা-র মেয়ে পৃথা তা যেমন প্রথম তালিকাতেই সুযোগ পেয়েছেন। এর পরে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়,দীপ্সিতা ধর, সৃজন ভট্টাচার্যদেরও এই মাধ্যমে আসার কথা। এ বার আকাশবাণীর প্রচারেও বিমান বসুর পাশাপাশি মীনাক্ষী, সৃজনদের এগিয়ে দিয়েছে সিপিএম।
বিজেপি ও তৃণমূলের বিরোধিতার পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চার বিকল্প কর্মসূচিই ‘বিকল্পের কথা’য় বলছেন নেতারা। করোনা অতিমারির ফের ভীতিজনক চেহারা নেওয়া প্রসঙ্গে সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘যে দেশে হাসপাতালে অক্সিজেন নেই, বেড নেই, ওযুধ নেই, মৃতদেহ ডিজ়েল-পেট্রল দিয়ে পোড়াতে হচ্ছে— সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টারে উড়ে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে অবান্তর কথা বলে বেড়াচ্ছেন!’’ করোনার প্রথম ধাক্কার সময়ে শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালানো থেকে শুরু করে বাড়িতে খাবার বা ওষুধ পৌঁছে দিয়ে, অক্সিজেন ও রক্তের ব্যবস্থা করে বাম কর্মী-সমর্থকেরা যে ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সংযুক্ত মোর্চার সরকার ক্ষমতায় এলে সেই কাজই আরও প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা নেবে বলে দাবি করেছেন সূর্যবাবু। ভোটের প্রচারের মধ্যেও বাম ছাত্র-যুবেরা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কিছু রক্তদানের আয়োজন করছেন বলেও সিপিএম নেতারা জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে চলছে প্রথাগত প্রচারও। ভবানীপুরের মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী এবং প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খানের সমর্থনে এ দিন চেতলা অহীন্দ্র মঞ্চ থেকে যদুবাবুর বাজার পর্যন্ত রোড-শো’য় ছিলেন এআইসিসি-র সিনিয়র পর্যবেক্ষক বি কে হরিপ্রসাদ এবং সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ। সর্বভারতীয় নেতৃত্বের পরামর্শে তাঁর প্রচার পুস্তিকা ভবানীপুরের দুই ‘হাই প্রোফাইল’ ভোটার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিকানায় স্পিড পোস্টে পাঠিয়েছেন শাদাব।