প্রতীকী ছবি।
জোটের স্বার্থে শেষ পর্যন্ত শান্তিপুর আসন কংগ্রেসকেই ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। নদিয়ায় গত বার কংগ্রেসের জেতা ওই আসনে এ বার দলের প্রার্থী হয়েছেন আইনজীবী-নেতা ঋজু ঘোষাল। সিপিএমও আসনটি লড়তে চায় বলে আগে জানিয়েছিল। প্রথমে সিপিএম ও কংগ্রেসের রাজ্য এবং পরে কেন্দ্রীয় স্তরের আলোচনার ভিত্তিতে টানাপড়েন কেটেছে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সব ভোটকে এক জায়গায় আনার লক্ষ্যে এবং বিভাজন আটকাতে তাঁরা কংগ্রেসের প্রার্থীকেই সমর্থন করছেন। বিমানবাবুদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
বামেদের সমর্থনে পাঁচ বছর আগে শান্তিপুর থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন অরিন্দম ভট্টাচার্য। পরে দল ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন, কিছু দিন আগে চলে যান গেরুয়া শিবিরে। এ বার উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল আসনে অরিন্দমকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বাম সমর্থনে গত বার নদিয়ার তিনটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীরা জিতেছিলেন এবং তিন জনেই দল বদল করেছেন, এই যুক্তিতে এ বার শান্তিপুরের মতো আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে দিতে নারাজ ছিল জেলার বাম শিবিরের বড় অংশই। যদিও গত বারের জেতা আসন হিসেবে শান্তিপুর জোটের মধ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্য। জেলার সমীকরণ মাথায় রেখেই আসনটি লড়ার দাবি তুলেছিল সিপিএম। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ আসন কংগ্রেস তাদের ছাড়তে না চাওয়ায় শান্তিপুর দাবি করে চাপ রাখছিল সিপিএম। যদিও তারা প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
সূত্রের খবর, দলের দুই নেতার মাধ্যমে এআইসিসি সিপিএম নেতৃত্বকে অনুরোধ জানিয়েছে, জোটের গৃহীত নীতি মেনেই কংগ্রেসের গত বারের জেতা আসন তাদের ছেড়ে দেওয়া হোক। সেইমতো সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বও বার্তা দিয়েছেন দলের নদিয়া জেলা নেতৃত্বকে। বাম সূত্রের বক্তব্য, শান্তিপুরে বিজেপির সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে প্রার্থী করার ঘোষণাও জোটরক্ষার পথ প্রশস্ত করেছে। সিপিএম ভেবে দেখেছে, জোট থাকলে শান্তিপুরে তাদের লড়াই জোরালো হবে এবং বিজেপির লড়াইও কঠিন করে দেওয়া যাবে।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু এ দিন বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে সংযুক্ত মোর্চা শক্তিশালী লড়াই গড়ে তুলেছে।। রাজ্য জুড়ে এই লড়াইকে রক্ষা করা এবং প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে শান্তিপুর কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য শান্তিপুরের সকল বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের নিকট আবেদন জানাচ্ছি’। কংগ্রেস অবশ্য এখনও শামসেরগঞ্জ ছাড়তে রাজি হয়নি। কংগ্রেস ও সিপিএম, দু’দলই সেখানে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ওই জেলার মুর্শিদাবাদ ও রানিনগর আসনে প্রার্থী দিতে চেয়ে জট পাকিয়েছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকও। দু’টিই কংগ্রেসের গত বারের জেতা আসন।