রাজ চক্রবর্তী এবং শুভ্রাংশু।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যারাকপুরে তৃণমূল-বিজেপি-র মধ্যে সংঘর্ষ বাধল। চলল গুলিও। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে পুলিশকে। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
বুধবার ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে তৃণমূল প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সেখানে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়। তখনই দু’পক্ষের সমর্থকদের ঝামেলা শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু’দলের সমর্থকরা। এই গন্ডগোলের সময়ই শুভ্রাংশুর লোকেদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। শুভ্রাংশুকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়, গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
তাদের আরও অভিযোগ, শুভ্রাংশুকে খুন করার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। যদিও হামলা এবং গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, “শুভ্রাংশ রায়ের লোকেদের উপর গুলি চালানো হয়। পুলিশের সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর থেকে নিন্দনীয় ঘটনা আর কী হতে পারে।” জাভেদ বলে এক সমাজবিরোধীর গুলি লাগে বলেও দাবি করেছেন অর্জুন। জাভেদ তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডা। তৃণমূলের গুন্ডারাই গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। শুভ্রাংশু বলেন, “মনোনয়ন দিয়ে বেরোচ্ছি যখন জানতে পারি তৃণমূলের গুন্ডারা আমাদের ছেলেকে মার হয়। তৃণমূলের গুন্ডারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। প্রতিবাদ করতেই ইট, লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে। পুলিশ নীরব দর্শকের মতোই দাঁড়িয়েছিল। আক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারত। আমার ঘাড়ে লেগেছে। ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।” তিনি আরও বলেন, “আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছে।” অন্য দিকে নৈহাটির তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিকের পাল্টা দাবি, “আমাদের ৩ জন কর্মী গুলিতে আহত হয়েছেন। অনুরোধ করব শুভ্রাংশু রায়কে এই ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ করুন। মানুষকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে দিন।”
তৃণমূল নেতা মদন মিত্র বলেন, “শুভ্রাংশু মুকুলের ছেলে। ওঁর ছেলে আহত হলেও দুঃখ পাব। এই নোংরা রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিই না। যখন মমতা আহত হয় তখন সেটা হয় নাটক। যখন মুকুলের ছেলে আহত হয় তখন সেটা গুরুতর।” তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে অর্জুন সিংহের। আমাদের তৃণমূলের ছেলেদের গায়েও হাত পড়েছে। এর পিছনে অর্জুন সিংহ রয়েছেন। অর্জুন থাকলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হতে পারে না বলেও দাবি তাঁর।
দু’পক্ষই যখন একে অপরের দিকে ঝামেলা এবং গুলি চালানোর অভিযোগ তুলছে, পুলিশ কিন্তু গুলি চালনার ঘটনাটা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার বলেন, “গুলি চলল কে বলেছে। এখানে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।” গোটা ঘটনাটি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।