West Bengal Assembly Election 2021

ভোটে শান্তি বজায় রাখাই বাহিনীর লক্ষ্য

সোমবার যে চারটি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে, তা দক্ষিণ কলকাতা এবং বন্দর এলাকায়। এর মধ্যে ভবানীপুর এবং বন্দর এলাকা অতি সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৪৩
Share:

ছবি পিটিআই।

কলকাতায় প্রথম দফার ভোট নির্বিঘ্নে পার করতে পেরেছিল কলকাতা পুলিশ। এক-দু’টি ঘটনা ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। সপ্তম দফার ভোটেও সেই নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায় কলকাতা পুলিশ। তার জন্য সব পরিকল্পনা করেই আজ, সোমবার মাঠে নামবে বাহিনী। শনিবারই লালবাজারের এই সংক্রান্ত বার্তা সব থানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আজ, সোমবার যে চারটি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে, তা দক্ষিণ কলকাতা এবং বন্দর এলাকায়। এর মধ্যে ভবানীপুর এবং বন্দর এলাকা অতি সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত। পিছিয়ে নেই রাসবিহারী বা বালিগঞ্জও। যার মধ্যে রয়েছে কড়েয়া, বেনিয়াপুকুর, পার্ক সার্কাসের মতো এলাকা। ফলে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই লালবাজারের কাছে চ্যালেঞ্জ।

পুলিশ জানিয়েছে, ভোট শুরু হওয়ার পরই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার যে ২৬টি থানা এলাকায় ভোট হচ্ছে, সেখানকার দুষ্কৃতীদের নামের তালিকা পাঠিয়ে তাদের থানায় নিয়ে এসে নজরবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। মনে করা হচ্ছে, ভোটের সময়ে যাতে তারা বাইরে ঘুরতে না পারে, তার জন্যই এই নির্দেশ। এক পুলিশ অফিসার জানান, কমিশনের ওই নির্দেশ মতো তালিকায় থাকা দুষ্কৃতীদের ভোটের সময়ে নজরবন্দি রাখা হবে। যাদের বিরুদ্ধে আগের ভোটে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ রয়েছে, তাদের দিয়ে নিয়ম মেনে মুচলেকা লেখানো হয়েছে পুলিশের তরফে। তাদের বাড়ি গিয়ে সতর্ক করে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, আগের বারের তুলনায় এ বার বুথের সংখ্যা কম। সব বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ১০০ মিটারের বাইরে থাকছে কলকাতা পুলিশ। গোলমাল ঠেকাতে রবিবার থেকেই সব জায়গায় বাড়তি বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ২৬টি থানাকে ১২ জন ডিসি-র হাতে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও থাকছেন স্থানীয় ডিসিরা। তাঁরা এ দিনই এলাকায় পৌঁছে গেছেন বাহিনী নিয়ে। এলাকায় ওই বাহিনী টহলও দিচ্ছে। ২৬ জন এসিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে এলাকায়।

লালবাজার সূত্রের খবর, কম এলাকায় ভোট হওয়ায় এ বার বাহিনীর সংখ্যা বেশি। তাই বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা কঠোর করা হয়েছে। রাস্তায় যেমন কেন্দ্রীয় বাহিনী ৫৭টি কুইক রেসপন্স টিম নিয়ে থাকবে, তেমনই থাকছে কলকাতা পুলিশের নিজস্ব ৪৪টি সেক্টর মোবাইল, ৭৮টি আরটি ভ্যান এবং ২৬টি এইচআরএফএস। এর বাইরে মোটরবাইকে টহল দেবে প্রায় ৩০০ পুলিশ। সার্জেন্টদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ওই বাহিনী।

এক পুলিশকর্তা জানান, দ্রুত যাতে গোলমাল সামাল দেওয়া যায়, তাই সবাইকে খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বলা হয়েছে। ডেপুটি কমিশনার, যুগ্ম কমিশনার-সহ শীর্ষ কর্তাদের বিশেষ দল কমব্যাট বাহিনী নিয়ে ঘুরবে বিভিন্ন এলাকায়। কোনও ভাবেই যাতে জমায়েত বা গোলমাল না হয় সেটা দেখার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। বহিরাগতদের ঠেকাতে ২৪টি জায়গায় নাকা-তল্লাশি এবং ৯১টি জায়গায় পিকেট চলছে। ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলবে।

এ বার ভোটে নতুন চ্যালেঞ্জ করোনা সংক্রমণ। বাহিনীর প্রায় ১৫০ সদস্য ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ভোটের ডিউটির সময়ে বাহিনীকে করোনা-বিধি মেনে চলতে বলেছে লালবাজার। সবাইকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়েছে।

লালবাজারের কর্তাদের কথায়, এ বারের ভোট তাঁদের কাছেও নতুন। এক দিকে করোনা ঠেকানো, অন্য দিকে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর লক্ষ্যেই বাহিনী রবিবার থেকে মাঠে নেমেছে। পুলিশকর্মীর ভাষায়, ‘‘অনেক দুষ্কৃতী আটকেছি এত দিন। সোমবার তার সঙ্গে অদেখা শত্রু করোনার বিরুদ্ধেও আমাদের লড়তে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement