ভোট-পরবর্তী: বাড়িতে ছেলের সঙ্গে যাদবপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রিঙ্কু নস্কর। রবিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠেছেন ৮টায়, কেউ উঠেছেন সকাল সাড়ে ৯টায়। কারও আবার একটু হাল্কা মেজাজে বাড়িতে সময় কাটানোর ইচ্ছা থাকলেও তার ফুরসত হয়নি! অন্য আর পাঁচটা দিনের মতোই সকাল সকাল উঠে দলের কাজেই বেরোতে হয়েছে। তবে বাড়িতে হোক বা দলের কাজে, তাঁরা যে ২ মে ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে, তা এ দিন হাবে-ভাবে বুঝিয়ে দিলেন সকলেই।
প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরে থেকে প্রতিদিনই পাড়ায় পাড়ায় দৌড়ে বেড়াতে হয়েছে তাঁদের। একটা গোটা দিন বিশ্রাম অথবা বাড়িতে সময় কাটানোর অবকাশ হয়নি। কখনও এ পাড়ায় মিছিল, রোড-শো তো কখনও অন্য পাড়ায় পথসভা। গত প্রায় এক মাস ধরে প্রতিটা দিন এ ভাবেই কাটছিল শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রের তারকা প্রার্থীদের। তবে শনিবার হয়ে গিয়েছে শহরের কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট। তার পরে অনেকেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে রবিবারের দিনটা কাটালেন। তবে কারও কারও দিন কাটল ব্যস্ততার মধ্যেই।
যাদবপুর কেন্দ্রে ভোটের দিন ছিল শনিবার। তবে ওই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী এ দিনও বিশ্রাম নিতে পারেননি। সকাল সাড়ে ৭টায় ঘুম থেকে উঠে হাল্কা খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়েছেন দলীয় কর্মসূচিতে। এ দিন তিনি দমদমে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে মিছিলে অংশ নেন। সেখান থেকেই বিকেলে শান্তিপুর ও কল্যাণীতে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য রওনা দেন। উত্তরবঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে রবিবার রাতেই ট্রেন ধরবেন বলেও জানান সিপিএমের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো শুধু ভোটের সময়ে মানুষের পাশে বা দলীয় কর্মসূচিতে থাকি না! সারা বছর আমাদের দলের নানা কাজের মধ্যে থাকতে হয়। তাই আমার কেন্দ্রে ভোট শেষের পরেও বিশ্রাম বা দেরি করে ওঠার ব্যাপার নেই।’’
ভোট-পরবর্তী: দমদমে ভোটের প্রচারে যাদবপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
কসবা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জাভেদ খান ভোটের পরের দিন সকালে বিশ্রামেই কাটিয়েছেন। ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে সকাল ৬টা-সাড়ে ৬টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হলেও রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঘুম থেকে উঠেছেন। পাশাপাশি, সকালে বিশেষ কোনও কাজও রাখেননি। তবে বিকেল ৪টের পরে তপসিয়ায় নিজের অফিসে গিয়ে কিছুটা সময় কাটান।
যাদবপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রিঙ্কু নস্করের এ দিন বিশ্রাম নেওয়ার সময় হয়নি। সকালে বাড়িতে কিছুটা সময় কাটিয়ে নিজের বিধানসভা এলাকার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে বেরোন। বিকেলের দিকে কিছুটা সময় বাড়িতে থাকলেও সন্ধ্যার দিকে আবার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে বেরোতে হবে বলেই তিনি জানান। তবে ভোটের ফলাফল নিয়ে যে চিন্তায় আছেন তিনি, তা এ দিন হাবেভাবে বুঝিয়ে দিলেন।
তপসিয়ার কার্যালয়ে কসবা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জাভেদ খান। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
কসবার সিপিএম প্রার্থী শতরূপ ঘোষ আবার অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠেছেন। তার পরেই অবশ্য সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দমদমে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে বলেই এ দিন জানালেন। অন্য দিকে, কসবা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ইন্দ্রনীল খাঁ সকাল সাড়ে ৬টাতেই ঘুম থেকে উঠে কর্মীদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছেন। বিকেলেও দলীয় কর্মীদের সঙ্গেই সময় কাটিয়েছেন বলেই জানান। তবে ভোটের ফল নিয়ে কোনও চিন্তা নেই বলেই দাবি করলেন পেশায় চিকিৎসক ওই প্রার্থী।
অবসর হোক বা দলীয় কর্মসূচি— ভোটের পরের দিন যে ভাবেই কাটুক, সকলেরই ‘পাখির চোখ’ ২ মে। ভোটের ফল প্রকাশের পরে কে কেমন মেজাজে থাকেন, এখন সেটাই দেখার।