ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে নিয়ে ভোট-রাজনীতির টানাপড়েন শুরু হয়ে গেল বোলপুরে!
গত ডিসেম্বরে বোলপুরে প্রকাশ্য জনসভা থেকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে সরাসরি ‘বিজেপির লোক’ বলে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক’দিন আগে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন ‘‘বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী আসলে উপাচার্যের প্রার্থী।’’ এ বার সেই বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করলেন, উপাচার্যের সঙ্গে ‘গভীর সম্পর্ক’ আছে অনুব্রত মণ্ডল ও বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্রনাথ সিংহের।
রবিবার রাতে সমাজমাধ্যমে বিজেপি আইটি সেলের তরফে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োয় অনির্বাণকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তৃণমূল প্রচার চালাচ্ছে আমি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ। আমি নাকি তাঁর সঙ্গে বসে বসন্ত উৎসব ও মেলা বন্ধ করার চক্রান্ত করেছি। এ সব বলে তারা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আদৌ যার কোনও সত্যতা নেই।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘বিশ্বভারতীর উপাচার্যের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল ও চন্দ্রনাথ সিংহের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।’’
আনন্দবাজার ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে তৃণমূলের প্রচারের পাল্টা জবাব দিতেই অনির্বাণ ওই দাবি করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, রবিবার দুপুরেই দোল উৎসব পালনের পরে অনুব্রত বলেছিলেন, “এ বছর দোল সে ভাবে উপভোগ করতে পারলাম না, বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব হল না পাগল একটা উপাচার্য এসেছে বলে!’’ তিনি অভিযোগ তোলেন, ‘‘উপাচার্য ও বিজেপি প্রার্থী মিলে একটি হোটেলে পরামর্শ করে এই উৎসব বন্ধ করেছে।”
রবিবার পৌষ মেলা বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকেও শহর জুড়ে মাইকিং করে বিজেপি প্রার্থী উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে প্রচার হয়। শহর জুড়ে উপাচার্য ও বিজেপি প্রার্থীর একসঙ্গে থাকা একটি ছবি দিয়ে পোস্টারও দেওয়া হয়।
অনির্বাণের ব্যাখ্যা, ‘‘যে ছবি নিয়ে আমাকে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলা হচ্ছে, সেটি জার্মানিতে একটি সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার ছিল, এর বেশি কিছু নয়।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘বিশ্বভারতীর উপাচার্য, অনুব্রত ও চন্দ্রনাথকে একাধিক বার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। তার বিভিন্ন ছবি আমরা পেয়েছি। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতেও উপাচার্যকে যেতে দেখা গিয়েছে। আর এই সত্যতাকে ঢেকে রাখা হয়েছিল। যখনই নির্বাচন আসে তখনই মানুষের সামনে এই সত্য প্রকাশ না করে নানা ভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়।’’
অনির্বাণের দাবি উড়িয়ে দিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী বোকা বলেই এই ধরনের কথা বলেছেন। উপাচার্যের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্কই নেই। উপাচার্য আমার বাড়ি এসেছিলেন ঠিকই। একবার আমার মা ও একবার আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার সময়ে। যেটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল।’’ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক ফোন ধরেননি, এসএমএস-এর উত্তর দেননি।