Bengal Polls: বামের ভোট কমাতে প্রচার চলছে, লড়াই তার মধ্যেই: বিমান

মানুষের কাছে বিমানের আবেদন, তাঁরা ভোট দিলেই বাম-সহ গণতান্ত্রিক শক্তি জিতবে এবং বিজেপি-তৃণমূলের বিকল্প সংযুক্ত মোর্চার সরকার তৈরি হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

বামেদের ভোট দিয়ে লাভ নেই, তারা জিততে পারবে না! গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই বামেদের সম্পর্কে এই প্রচার চালানো হচ্ছে এবং এর মোকাবিলা করেই তাঁরা ময়দানে লড়াই করছেন বলে জানালেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর আক্রমণের তির মূলত বিজেপির দিকে। সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছেন তিনি। মানুষের কাছে বিমানবাবুর আবেদন, তাঁরা ভোট দিলেই বাম-সহ গণতান্ত্রিক শক্তি জিতবে এবং বিজেপি ও তৃণমূলের বিকল্প সংযুক্ত মোর্চার সরকার তৈরি হবে।

Advertisement

জোটসঙ্গী কংগ্রেস, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এবং বামফ্রন্টের শরিক নেতাদের পাশে নিয়ে বুধবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সংযুক্ত মোর্চার তরফে যৌথ আবেদন প্রকাশ করেছেন বিমানবাবু। যে আবেদনে বলা হয়েছে, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা, দুর্নীতমুক্ত স্বচ্ছ সরকার গড়তে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়ী করুন’। এই প্রসঙ্গেই বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘বামেদের ভোট দিয়ে কী হবে, তারা জিততে পারবে না— এই প্রচার গত লোকসভা ভোটের সময় থেকে শুরু হয়েছে। ‘আগে রাম, পরে বাম’— এই রকম প্রচারও চালানো হচ্ছে। এর কোনওটারই বাস্তব ভিত্তি নেই। মূলত বিজেপির আইটি সেলের কাজ এই ধরনের প্রচার।’’ কখনও কখনও তৃণমূলও বলছে, বামেদের দিয়ে ভোট ‘নষ্ট’ না করে তাদের সমর্থন করাই ভাল। বিমানবাবুর মতে, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই চেষ্টা চলছে। কিন্তু সত্যটা সত্যই থাকে, মিথ্যা সত্য হয়ে যায় না!’’

বিমানবাবুদের সহজ যুক্তি, ভোটারদের সমর্থন পেলেই কোনও দল সরকার গড়তে পারে। আগে থেকেই ‘জিততে পারবে না’র ধারণা তৈরি করা হচ্ছে কখনও বিজেপি, কখনও তৃণমূলের সুবিধার জন্য। ঘটনা হল, লোকসভা ভোটে বামেদের পুরনো ভোটের বড় অংশই বিজেপিতে গিয়েছিল। বামেরা সামাজিক মাধ্যমে এখন যথেষ্ট সক্রিয়। তারা কি বিজেপির আইটি সেলের প্রচারের মোকাবিলা করতে পারছে না? বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘সব জবাব কি সামাজিক মাধ্যম দিয়ে হয়? মাঠে-ময়দানে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী এবং কর্মীরা বলছেন, কেন বিজেপিকে রুখতে হবে, কেন তৃণমূলকে পরাস্ত করতে হবে। বাসে-ট্রেনে-নৌকায় নানা রকম পদ্ধতিতে প্রচার চলছে। সেগুলো তো শুনতে হবে।’’

Advertisement

মোর্চার যৌথ আবেদনে কোথাও ইমাম ভাতা, ধর্মীয় অনুদান বা মন্দির-মসজিদ গড়ার কথা নেই। কর্মসংস্থান এবং সামাজিক ন্যায়েই জোর দেওয়া হয়েছে সেখানে। এই আবেদন সামনে রেখেই বাম নেতারা বলছেন, তাঁরা কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত ধরে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে আপস করেননি। বিমানবাবুর মন্তব্য, ‘‘আইএসএফ একটি মৌলবাদী সংগঠন, এই প্রচারও বেশি করে ছড়িয়েছে বিজেপির আইটি সেল। এই আবেদনে কোথাও কি সাম্প্রদায়িকতামূলক কথা বা দাবি আছে? মৌলবাদী হলে কি আইএসএফের প্রার্থী তালিকায় তফসিলি জাতি-জনজাতি, বন্দ্যোপাধ্যায়-চট্টোপাধ্যায়েরা থাকতেন?’’

আইএসএফে যোগ দিয়েছেন লেখক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা সৌমিত্র ঘোষ দস্তিদার। বিমানবাবুর পাশে বসেই তিনি এ দিন বলেছেন, ‘‘আইএসএফ কোনও দল নয়, বিভিন্ন সংগঠনের একটা মঞ্চ। তারা বহুজনের রাজনীতি, ভূমিপুত্রদের অধিকারের কথা বলছে। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সংযুক্ত মোর্চা লড়ছে। আইএসএফের সঙ্গে আলোচনা করতে অনেকেই আসতে পারেন। কিন্তু নীতি থেকে আমরা সরব না।’’

মোর্চার মধ্যে পাঁচটি আসনে এখনও জট রয়ে গিয়েছে। বিমানবাবুর দাবি, সামান্য যে কয়েকটি আসনে সমস্যা রয়েছে, তার প্রভাব সার্বিক ভাবে জোটের উপরে পড়বে না। আলিমুদ্দিনে উপস্থিত কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, ‘‘আলাপ-আলোচনায় ওই জটটুকুও ছাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। সর্বত্র কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে বামপন্থী কর্মী-সমর্থকেরা যে ভাবে ময়দানে নেমেছেন, তা অভূতপূর্ব!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement