ফ্রেমবন্দি: লোকপুরে মঞ্চে এক তরুণীর নিজস্বীর অনুরোধ মেটাচ্ছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুর ‘বদলা’ ভোট বাক্সে নেওয়ার আহ্বান জানালেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার খয়রাশোলের দু’টি জনসভা থেকে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অনুব্রত বলেন, ‘‘মা-বোনেদের বলছি। সব ভাইদের বলছি। এর পরের ভোট থেকে যখন ভোট হবে, তখন কেন্দ্রীয় বাহিনী যাঁদের গুলি করে মেরেছে, তাঁদের জন্য ভোট করবেন। এর বদলা আমাদের ভোটবাক্সে নিতে হবে।’’
চতুর্থ দফার ভোটে শনিবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে কোচবিহারের শীতলকুচিতে। ওই ঘটনায় রবিবার রাজ্য জুড়ে ‘কালো দি’ন পালন করছে তৃণমূল। এ দিনই বীরভূমে শেষ দফার ভোটের জন্য দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত খয়রাশোল ব্লকে দু’টি জনসভা করেন অনুব্রত। একটি পারশুণ্ডী, অন্যটি লোকপুরে। গোটা ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ৫টি করে ভাগ করে এক একটিতে দলীয় প্রার্থী দেবব্রত সাহার জন্য সভার আয়োজন করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।
গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপির থেকে অনেক পিছিয়ে থাকা খয়রাশোলের ভোটার ও দলীয় কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করতে কার্যত শীতলকুচির ঘটনাকেই হাতিয়ার করেন অনুব্রত। শেষ বিকেলে লোকপুরে বক্তব্যের শুরুতেই অনুব্রত বলেন, ‘‘কয়েকটা কথা বলতে এসেছি। কিন্তু, এত যন্ত্রণা বুকে, যে বুঝিয়ে বলতে পারব না। আমরা দীর্ঘদিন রাজনীতি করি। এত ভোট দেখে এলাম। সিআরপিএফ মানুষ মেরে দেয় এই প্রথম দেখলাম। এ কোন নির্বাচন কমিশনার! মানুষের উপর গুলি চালানো হবে, ভাবতেই পারছি না।’’
কেন এমন ঘটনা ঘটেছে, তার নেপথ্যে কারণও ব্যাখ্যা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দুষে অনুব্রত বলেন, ‘‘তুমি নির্বাচন কমিশনারকে দিয়ে যা করানোর, তাই করেছো। তিন দফার ভোটে আমরা জিতে গিয়েছি। তাই রাগ প্রকাশ করলে। এটা কি কোনও মানুষের কাজ? এটা কি কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ?’’
দলীয় প্রার্থীর জন্য ভোট প্রার্থনা করলেও অনুব্রতের মূল স্বর এ দিন বাঁধা ছিল বিজেপি বিরোধিতায়। তিনি দাবি করেন, শনিবার একচেটিয়া ভোট হয়েছে। ৪৪ আসনের মধ্যেই তাঁরাই ৪২টি পাবেন। অনুব্রতের কথায়, ‘‘বাংলার মানুষ গর্জে উঠেছে। ছিঃ ছিঃ করেছে। এটা (গুলি চালানো) মেনে নেয়নি। এখনও মানবে না। খুনের রাজনীতি চায় না। সেটা আগামী দিন ভোট বাক্সে বোঝাতে হবে। বিজেপিকে একটিও ভোট নয়।’’
যা শুনে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলছেন, ‘‘ওঁর কথায় সব হবে নাকি! উনি খেলতে চেয়েছিলেন। মানুষ খেলা শেষ করে দিয়েছে। তাই ভুল বকছেন। আমাদের দলের প্রার্থীদের আক্রমণ করছেন। যেটা রবিবার লোকপুরে ও নানুরে ঘটেছে। বিজেপি সরকারে আসছে মিলিয়ে নেবেন।’’