প্রতীকী ছবি। —ফাইল চিত্র
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কাজে আসা আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের যাতায়াতের জন্য রাজ্য পরিবহণ নিগমের ২২৫টি বাস উঠে যাচ্ছে রাস্তা থেকে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এই কারণে রাস্তায় কমতে শুরু করবে সরকারি বাসের সংখ্যা। তাই বাস পেতে হয়রানি বাড়তে পারে নিত্যযাত্রীদের।
আনলক-পর্বে দীর্ঘ দিনই সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলেছে রাজ্য পরিবহণ নিগমের হাজারখানেক বাস। সেই সময়ে দৈনিক জ্বালানির খরচের তুলনায় টিকিট বিক্রি বাবদ আয় সে ভাবে না হওয়ায় আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। যা গত কয়েক মাসে অনেকটাই বেড়েছে। ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে জ্বালানির খরচ আগের চেয়ে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য পরিবহণ নিগমের এসি এবং ভলভো বাস পরিষেবা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। দুপুরে এবং রাতে যে সময়ে যাত্রী কম থাকে, সেই সময়কার অধিকাংশ ‘ট্রিপ’ বাতিল করা হচ্ছে। ফলে, শহরের রাস্তায় সরকারি বাসের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা বেড়েছে।
এই অবস্থায় বাসের সংখ্যা এক ধাক্কায় ২২৫টি কমে গেলে দৈনিক পরিষেবায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য বলেই মনে করছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। দূরের জেলাগুলিতে ওই সব বাস নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাস-পিছু দু’জন করে চালক লাগছে বলে খবর। ফলে, নির্বাচনের কাজে শুধু বাস দেওয়াই নয়, ওই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্য পরিবহণ নিগমে চালকের সংখ্যাতেও টান পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে আরও অতিরিক্ত সাড়ে তিনশো চালককে জোগাড় করার উপায় ভাবতে হয়েছে রাজ্য পরিবহণ নিগমকে। তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আগেই চালক নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্য পরিবহণ নিগমের অধীনে থাকা ‘কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা’ এবং ‘কলকাতা ট্রাম কোম্পানি’ ১০০টি করে মোট ২০০টি বাসের জোগান দিচ্ছে। এ ছাড়া, ‘পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম’ আরও ২৫টি বাস দিচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বাস পরিষেবা দিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে বকেয়া টাকার কিছুটা পেয়েছে রাজ্য পরিবহণ নিগম। এ ছাড়া, পরিকল্পনা খাতে বরাদ্দ অর্থেরও কিছুটা পেয়েছে তারা। আপাতত, ওই টাকা দিয়েই বাসের রক্ষণাবেক্ষণ এবং টায়ার কেনার কাজ করা হচ্ছে। যাত্রী-ভাড়ার টাকা থেকে কোনও মতে তেলের খরচ তুলে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
এ বার রাজ্যে মোট আট দফায় নির্বাচন হবে। অন্যান্য বার পাহাড় থেকে ধাপে ধাপে সমতলের দিকে নির্বাচন এগোয়। এ বার সেই রীতি পরিবর্তিত হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের নানা প্রান্তে বাসগুলিকে একাধিক বার ছুটতে হবে বলে খবর। সেই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই বাস ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করতে হচ্ছে বলে নিগম সূত্রের খবর।