দিদি ঝড়ের সামনে জোট মুখ থুবড়ে পড়তেই বাংলার জোটপন্থী সিপিএম নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বৃন্দা কারাট। বললেন, জোটের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না ভুল, তা এ বার বিচার করে দেখা দরকার। কেরলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে পরাস্ত করে ক্ষমতায় ফেরার জন্য সে রাজ্যের বাম নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বৃন্দা কারাট।
সিপিএমের কারাট লবি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার ঘোর বিপক্ষে ছিল। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেরলের নেতারা এই জোটের ঘোর বিরোধিতা করেন। কিন্তু সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমরা জোটের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন।
ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বামেদের কোনও লাভ হয়নি জোট করে। মমতাকে হঠানো তো দূরের কথা, শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ হিসেবেও উঠে আসতে পারেনি বাম-কংগ্রেসের জোট। আলাদা আলাদা লড়ে কংগ্রেস আর বামেরা গত লোকসভা নির্বাচনে মোট যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিল, এ বার এক সঙ্গে লড়ে তার চেয়ে ২ শতাংশ ভোট কম পেয়েছে তারা। কংগ্রেসের ভোট প্রাপ্তি কিছুটা বেড়েছে। লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় নিজস্ব ভোট ২ শতাংশ বাড়িয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু বামেদের ভোট ৪ শতাংশ কমে গিয়েছে। অর্থাৎ সিপিএম তথা বামেদের অস্তিত্বের সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের জেরেই এই তুমুল প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে, বোঝাতে চেয়েছেন বৃন্দা। বাংলার ফলাফলের প্রণতা স্পষ্ট হতেই সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত ঠিক না ভুল, তা এ বার বিচার হওয়া দরকার।’’ কেরলে বামেদের জয়ের জন্য সে রাজ্যের বাম নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানান বৃন্দা। তিনি বলেন, ‘‘সাবাশ কেরল।’’ এই কথা বলে বৃন্দা শুধু কেরলকে অভিনন্দন জানাতে চেয়েছেন বলে মনে করছে না ওয়াকিবহাল মহল। বৃন্দা আসলে বাংলার সিপিএম নেতাদের খোঁচা দিতে চেয়েছেন বলেই বিশ্লেষকদের মত। কেরলের সিপিএম নেতৃত্বই যে সঠিক পথে রয়েছে, সে কথাই স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন প্রকাশ কারাটের সহধর্মিনী।
একই সুর শোনা গিয়েছে এ রাজ্যের এক সিপিএম নেতার গলাতেও। তিনি বিনপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী দিবাকর হাঁসদা। পরাজয়ের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করাটা ভুল হয়েছিল। উপলব্ধি করলাম মানুষ আমাদের পাশে নেই।’’