মহামিছিলে সমর্থকদের আনতে এক বাস মালিকের কাছে বাস চেয়েছিলেন উদয়ন গুহ। বাস মেলেনি। তাই, ওই মালিকের শিলিগুড়িগামী দু’টি বাস মাঝ রাস্তায় আটকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের দিনহাটা কেন্দ্রের প্রার্থী উদয়নবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, সোমবার তাঁর একটি বাস যখন দিনহাটা চৌপথী থেকে চেকপোস্টে পৌঁছয়, সেই সময় তৃণমূল সমর্থকরা গাড়িটিকে আটকে দেয়। পরে তাঁর আরও একটি বাস সেখানে গেলে সেটিকেও আটকে দেওয়া হয়। নানা ভাবে তাঁদের কাছে বাস চালক, কর্মীরা অনুরোধ করলেও বাস যেতে দেওয়া হয়নি। বাস দুটিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। দিহাটায় চৌপথী ফিরে বাস শ্রমিকরা গাড়ি রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে দাঁড় করিয়ে অবরোধ করে। সাড়ে ৭ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত অবরোধ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। যান উদয়নবাবুও। রাস্তা থেকে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেন তিনি। ওই ঘটনায় সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে। দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, “বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
উদয়নবাবুর বক্তব্য, “ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ অবরোধ মেনে নেওয়া যায় না। পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে আমার দায়িত্ব আছে। সে কারণেই অবরোধ তুলতে সাহায্য করেছি।” তাঁর অভিযোগ, ওই বাস মালিক বাম জোটের মিছিল ও সভায় গাড়ি দিয়েছেন। অথচ তৃণমূলের তরফে আর্জি জানানো হলেও তিনি কোনও বাস দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “বাস মালিকের দুইরকম ভূমিকা ঠিক নয়। তবে কারা বাস আটকিয়েছে, সেখানে কি হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তারাপদ বর্মন উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে ভয় দেখানোর রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “ওই বাস মালিকের বেশ কয়েকটি গাড়ি রয়েছে। সেগুলি শিলিগুড়ি যাতায়াত করে। যাত্রী সুবিধের কথা ভেবে ওই গাড়ি কোনও দল নেয় না। এদিন তৃণমূল যা করল তা কেউ মেনে নেবে না। যাত্রীদের হয়রান হতে হল। এভাবে ভয় দেখিয়ে, গা-জোয়ারি করে ভোটে জেতা যাবে না।”
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি, কোচবিহার ধুবরির বিভিন্ন রুটে বাসের মালিক শিবু মুখোপাধ্যায়ের ১৭ টি বাস রয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু ট্রাক আছে তাঁর। দিনহাটায় কোনও রাজনৈতিক দল সভা বা মিছিল করলে তাঁর কাছ থেকে বাস, ট্রাক চেয়ে আবেদন জানায়। ১৭ এপ্রিল উদয়নবাবু দিনহাটায় মহামিছিলের ডাক দেন। ওই মিছিলে বিধানসভা এলাকার চৌধুরিহাট, শুকারুরকুঠি, সাহেবগঞ্জ, নয়ারহাট, কিসামতদশগ্রাম, শালমারা, নাজিরহাট, বড়শাকদল সহ নানা জায়গা থেকে কর্মী-সমর্থকদের বাসে, ট্রাকে করে নিয়ে আসা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বাসের জন্য শিবুবাবুর কাছেও আর্জি জানানো হলেও তিনি তা দিতে রাজি হননি।
শিবুবাবুর পাল্টা দাবি,, তৃণমূলের দাবি মেনে তিনি ওই মিছিলের জন্য ৬ টি ট্রাক দেন। কিন্তু বাস দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। কারণ তাঁর কয়েকটি বাস ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে নিয়েছে। বাকি বাসগুলি শিলিগুড়ি চলছিল। যাত্রীরা ওই বাসগুলির উপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, “ওই বাস দিলে যাত্রীরা অসুবিধের মধ্যে পড়বে ভেবেই বাস দেইনি। সে কথা জানিয়েও দিই তৃণমূল নেতাদের।”