নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনকে বার বার ভুয়ো বলে দাবি করেও চাপের মুখে পিছু হঠল তৃণমূল। নারদ কাণ্ডে দলীয় তদন্তের কথা ঘোষণা করলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে পার্থবাবু জানালেন, যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, দল তাঁদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করবে। দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারদ নিউজ তৃণমূলের প্রায় এক ডজন নেতা-মন্ত্রী-সাংসদের টাকা নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ করেছে মার্চে। প্রথমে কিছুতেই সেই ভিডিওর সত্যতা মানতে রাজি হয়নি তৃণমূল। তদন্তের প্রশ্ন যতবারই উঠেছে, ততবারই তৃণমূলের নেতারা বলেছেন, যা মিথ্যা তা নিয়ে তদন্ত হওয়ার প্রশ্নই নেই। কিন্তু শনিবার সেই অবস্থান থেকে সরে এল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, দল তাঁদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করছে। কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হন, তা হলে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’ বিরোধীদের চক্রান্তের তত্ত্ব থেকে অবশ্য এখনও সরে আসতে রাজি নয় তৃণমূল। পার্থবাবু এ দিন দাবি করেন, কংগ্রেসের আহমেদ পটেল, বিজেপির সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এবং সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির হাত রয়েছে এই ভিডিও প্রকাশের পিছনে। বেছে বেছে ঠিক নির্বাচনের আগেই কেন এই ভিডিও প্রকাশ করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এর পিছনে আছেন, তাঁদের অবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে। যদি প্রমাণ হয় ভিডিও ভুয়ো, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে তৃণমূল।’’
আরও পড়ুন:
নারদ-ছবি কি দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে
বিরোধীরা তৃণমূলের এই ঘোষণাকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়েছেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের প্রার্থীপদ আগে বাতিল করুন। যে সাংসদদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের আগে পদত্যাগ করান। তা না করে শুধু দলীয় তদন্ত ঘোষণা করে লাভ কী? সৎ সাহস থাকলে তৃণমূল সিবিআই তদন্ত করাক। দলীয় তদন্তও যদি করতে হয়, তা হলেও যত দিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, তত দিন অভিযুক্তদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখা উচিত।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘এ সব পাগলের প্রলাপে বাংলার মানুষ আর ভুলবে না। ওঁদের দলীয় তদন্তের আবার কোনও মানে আছে নাকি? তৃণমূল দলটা হল আলিবাবা আর চল্লিশ চোরের দল। আলিবাবা তদন্ত করে চল্লিশ চোরকে শাস্তি দেবে, এ কথা কেউ বিশ্বাস করবেন!’’