হুমকি সত্ত্বেও পুলিশ সোজাই রাখল শিরদাঁড়া

শিরদাঁড়ারই জয় হল! সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভিতু’ পুলিশ! বুথের বাইরে বেআইনি জমায়েত দেখলেই লাঠি উঁচিয়ে তাড়া। বিরোধী দলের সমর্থকদের উপরে হামলার খবর পেলে দ্রুত গিয়ে হানাদারদের শায়েস্তা। কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বুথের বাইরে শাসক দলের ছাউনি ভেঙে দেওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০৪:৪১
Share:

শিরদাঁড়ারই জয় হল! সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভিতু’ পুলিশ!

Advertisement

বুথের বাইরে বেআইনি জমায়েত দেখলেই লাঠি উঁচিয়ে তাড়া। বিরোধী দলের সমর্থকদের উপরে হামলার খবর পেলে দ্রুত গিয়ে হানাদারদের শায়েস্তা। কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বুথের বাইরে শাসক দলের ছাউনি ভেঙে দেওয়া। আগের তিন দফার মতোই বৃহস্পতিবার রাজ্যের দুই জেলায় ভোট শাসন করল পুলিশ। এমনকী, কোথাও কোথাও শাসক দলের স্থানীয় নেতাদেরও রেহাই মেলেনি লাঠি থেকে! দিনভর এ ভাবেই সক্রিয় থেকে এ বারের বিধানসভা ভোটের শেষ পর্বে নিজেদের উর্দি ও শিরদাঁড়ার সুনাম অক্ষত রাখল পুলিশ!

লম্বা ভোট-পর্বের প্রথম দিকে পুলিশ শুরুটা করেছিল এ রাজ্যের পুলিশের মতোই! কোথাও ভোটারদের প্রলোভন দেখিয়ে ভোট আদায় হয়েছে, কোথাও ভূতেদের কেরামতি চলেছে বুথে। আর পুলিশ থেকেছে মুখ ফিরিয়ে। নির্বাচন কমিশনের চাপে কলকাতায় প্রথম পর্বের ভোট থেকে ছবিটা বদলাতে শুরু করেছিল। টেবিলের তলায় মুখ লুকিয়ে ফেলার পরম্পরা ছেড়ে পুলিশ সে দিনই লাঠি ধরেছিল। পরপর তিন পর্বে এই চালিয়ে খেলা অব্যাহত থাকলেও একেবারে শেষ পর্বে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রবল কৌতূহল তৈরি করে দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী! কারণ, শেষ পর্বের ভোটের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কিছু ‘ভিতু’ পুলিশ দিল্লির বাহিনীর মদতে বাড়াবাড়ি করছে। সরকারে ফিরে এসে তিনি সব হিসাব বুঝে নেবেন!

Advertisement

এমন হুমকির পরে পুলিশ শিরদাঁড়া গুটিয়ে ফেলে কি না, সেটাই দেখার ছিল। এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না, হলদিয়া, পূর্ব পাঁশকুড়া বা কোচবিহারের শীতলখুচি, নাটাবাড়ি, দিনহাটা, মাথাভাঙার নানা এলাকা সাক্ষী— সিঁটিয়ে যায়নি পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গেই যোগ্য সঙ্গত করেছে তারা। তৃণমূলের হুমকিতে সন্ত্রস্ত মানুষকে বুথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছে পুলিশ। শাসক দলের লোকজন কোথাও মার খেয়েছেন, কোথাও গ্রেফতার হয়েছেন। মেজাজ হারিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মতো দাপুটে নেতা। আর বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘এক পর্ব থেকে অন্য পর্বে উত্তরণে নির্বাচন কমিশন শিক্ষা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে পুলিশও সঙ্গত ভূমিকা নেওয়ার চেষ্টা করেছে।’’

সোজা ব্যাটে অবস্থা সামলাতে সকাল থেকেই সতর্ক ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর ও কোচবিহারের দুই পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও সুনীল যাদব। রাজোরিয়া দফতরে ছিলেন সকাল পৌনে ৬টা থেকেই। ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) জ্ঞানবন্ত সিংহ ও ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্য। দিনের শেষে রাজোরিয়ার স্বস্তি, ‘‘কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিতেই ভোট মিটেছে। যে সব এলাকায় ঘরছাড়ারা ফিরেছিলেন, তাঁরাও ভোট দিতে পেরেছেন।’’

স্বস্তি উর্দিরও!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement