শুধু লাইন ঠিক রাখতে বুথে দু’-এক জন পুলিশ

জোড়া নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। বিধানসভা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে রাজ্যের সব বুথেই যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, গোড়াতেই তা জানিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে অন্তত এক জন পুলিশকর্মীকে ভোটকেন্দ্রে রাখা হবে। তাঁর বা তাঁদের একমাত্র কাজ হবে ভোটারদের লাইন ঠিক রাখা। কিন্তু এই পুলিশরাও যাতে কোনও ভাবেই ভোট প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে দু’টি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৫১
Share:

জোড়া নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের।

Advertisement

বিধানসভা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে রাজ্যের সব বুথেই যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, গোড়াতেই তা জানিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে অন্তত এক জন পুলিশকর্মীকে ভোটকেন্দ্রে রাখা হবে। তাঁর বা তাঁদের একমাত্র কাজ হবে ভোটারদের লাইন ঠিক রাখা। কিন্তু এই পুলিশরাও যাতে কোনও ভাবেই ভোট প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে দু’টি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

কী সেই নির্দেশ?

Advertisement

কমিশন সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—
১) যে থানা এলাকায় ভোটগ্রহণ চলছে, ওই থানা এলাকার কোনও পুলিশকে ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন করা যাবে না।
২) যে পুলিশকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে বহাল হবেন, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলার সময়ে তাঁরা কোনও অবস্থাতেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।

কেন এই নির্দেশ?

নির্বাচন কমিশনের কর্তারা জানাচ্ছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট থেকে শুরু করে এ রাজ্যের পুরভোট এবং পঞ্চায়েত ভোটে বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি। বিশেষ করে বিধাননগর পুরভোটে কী ভাবে ভোট লুঠ দেখেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে, সে খবরও পেয়েছে কমিশন। তাই বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার সময়েই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।

তবে ভোটকেন্দ্রে লাইন ঠিক করার কাজেও রাজ্যের পুলিশ রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সূত্রের দাবি, ভোটকেন্দ্রে বুথের সংখ্যার নিরিখেই ঠিক হবে, কত জন পুলিশকর্মী সেখানে থাকবেন। তবে সংখ্যাটা মেরেকেটে জনাদুয়েকের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবু বিরোধীদের আশঙ্কা, ওই পুলিশকর্মীদের সাহায্যেই বুথের ভিতরের খবরাখবর পৌঁছে যেতে পারে স্থানীয় শাসক দলের নেতা কিংবা দুষ্কৃতীদের কাছে।

কমিশন অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘বুথে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর কমিশন। সে কারণেই এমন কড়া নির্দেশ।’’

রাজ্যে ভোট ঘোষণার পরেও কখনও নারদ কাণ্ড, কখনও বিজেপি নেতাকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টার মতো ঘটনায় পুলিশ সুপার থেকে কমিশনার— বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের নাম উঠেছে। উঠেছে শাসক দলের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ। কমিশন সূত্রের দাবি, এ সবই নজরে রাখা হচ্ছে। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

রাজ্য পুলিশের এক কর্তাও মেনে নিলেন, নিজের থানা এলাকায় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকে আইনরক্ষকদের। কিন্তু নিজের থানা এলাকার বাইরে মোতায়েন করা হলে সেই প্রবণতায় লাগাম টানা সম্ভব। মোবাইলের ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাঁর ব্যাখ্যা, ভোটকেন্দ্রে গোলমাল হলে সেখানে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা মোবাইল মারফত উপরওয়ালাদের খবর দিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের মারফতই কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা ভোটারদের গতিবিধি অন্য দলের কাছে পাচার হওয়ার অভিযোগ মেলে। কমিশনের কড়া পদক্ষেপে এই সমস্ত রেওয়াজ এ বার বদলায় কি না, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement