বিস্তর টালবাহানার পরে অবশেষে লোকসভার নীতি কমিটির হাতে নারদ-কাণ্ডের অসম্পাদিত ভিডিও ফুটেজ তুলে দিলেন নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল। তবে রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের ভোট-পর্ব শেষ হওয়ার আগে নীতি কমিটির তদন্তের ফল প্রকাশের কোনও সম্ভাবনাই নেই!
নারদ-কাণ্ড সামনে আসার পরেই লোকসভায় সিপিএম ও কংগ্রেসের চাপে নীতি কমিটি গঠিত হলেও বিষয়টি নিয়ে তদন্তে গোড়া থেকে তারা ঢিলেঢালা ভাব দেখিয়েছে। নীতি কমিটি তদন্তের দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পনেরো দিন পরে প্রথম ফোন করা হয় ম্যাথু স্যামুয়েলকে! আজ ম্যাথু এথিক্স কমিটির দফতরে পৌঁছে শোনেন, যে অফিসার তাঁকে চিঠি দিয়েছিলেন, তিনি দু’দিন আগে অবসর নিয়েছেন! তাই আজ নারদ-কাণ্ডের সিডি জমা নেওয়া যাবে না! ফিরে আসার সময় ফের ম্যাথুর কাছে ফোন যায় কমিটির সচিবালয় থেকে। বলা হয়, যোগাযোগের বিভ্রান্তির জন্যই এই দুর্গতি। আবার ফিরে এসে সিডি জমা দেন ম্যাথু।
অনেকেই বলছেন, সচিবালয়ের বিভ্রান্তির জন্য আজকের এই বিভ্রাট হতেই পারে। কিন্তু সার্বিক ভাবে তদন্তে যে গড়িমসি চলছে, তার কারণ রাজনৈতিক। এ দিন সিপিএম নেতৃত্বও একই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, মোদীভাই-দিদিভাই আঁতাঁতের আরও একটা উদাহরণ সচিবালয়ের এই গয়ংগচ্ছ আচরণ! এটা ঠিক রাজ্যস্তরে কংগ্রেস-সিপিএমের পাশাপাশি বিজেপিও নারদ-তদন্ত দ্রুত শেষ করে রিপোর্ট দেওয়ার দাবি তুলেছে। সম্ভব হলে পশ্চিমবঙ্গে ভোট চলাকালীনই। কিন্তু বিজেপি সূত্রের খবর, নীতি কমিটির চেয়ারম্যান লালকৃষ্ণ আডবাণীর উপর দলের কেন্দ্রীয় স্তর থেকে চাপ দেওয়া হয়েছে এখনই তদন্তের ফল প্রকাশ না করতে। কারণ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধারণা, এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভাল ফলের সম্ভাবনা নেই। খামোখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চটিয়ে রাজ্যসভায় সমর্থনের প্রশ্নে কোনও সঙ্কট তৈরি করতে চাইছেন না তাঁরা। তা ছাড়া রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেস দুর্বল হলে আখেরে বিজেপিরই লাভ। এই অবস্থায় আডবাণীর পক্ষে আগ বাড়িয়ে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।