শক্তিক্ষয়ে লাভ নেই, মেপে প্রচার মোদীর

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৩০টির বেশি জনসভা করেছেন তিনি। অসমে আসন্ন বিধানসভা ভোটে শুধু প্রথম দফাতেই ছ’টি সভা করার কথা তাঁর। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রশ্নেই যেন অন্য রকম দেখাচ্ছে মোদীকে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৩:১৯
Share:

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৩০টির বেশি জনসভা করেছেন তিনি। অসমে আসন্ন বিধানসভা ভোটে শুধু প্রথম দফাতেই ছ’টি সভা করার কথা তাঁর। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রশ্নেই যেন অন্য রকম দেখাচ্ছে মোদীকে!

Advertisement

গত লোকসভা ভোটেও রাজ্যে সাতটি জনসভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিধানসভা ভোটে এখনও পর্যন্ত তিনি দু’দফায় মাত্র দু’টি জনসভা করবেন বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। ২৭ মার্চ খড়্গপুরে ও ১৭ এপ্রিল কলকাতায়। সংখ্যাটা বাড়লেও খুব বেশি আশা করছেন না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বই!

কিন্তু কেন? বিশেষ করে লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন বারবার বলেছেন, এ বারে তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য পূর্ব ভারত জয়। বিহার ও অসমে মোদীর নির্বাচনী প্রচারের সূচিও ঠিক হয়েছিল সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই। তা হলে পশ্চিমবঙ্গ কেন ব্যতিক্রম? বিশেষ করে লোকসভা ভোটে প্রায় সাড়ে তেরো শতাংশ ভোট বাড়িয়ে ১৭ শতাংশে পৌঁছে যাওয়া বিজেপি তখন বাংলায় নতুন শক্তি। বহু আসনে সিপিএম-কংগ্রেসকে সরিয়ে দু’নম্বর জায়গাটা বিজেপি দখল করার পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তখন সারদা-সহ নানা প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ও সরকারকে নিত্য বিঁধতেন। সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, অমিত শাহদের হুঙ্কার ও ‘ভাগ মদন ভাগ’, ‘ভাগ মুকুল ভাগ’ স্লোগানে বিজেপিই হয়ে উঠেছিল তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ। কিন্তু সেই হাওয়াই ধীরে ধীরে দুর্বল হয়েছে। বিজেপি নেতাদের সেই হুঙ্কারও উধাও! উল্টে মোদী-দিদি সমঝোতার অভিযোগে সরব সিপিএম-কংগ্রেস। এই অবস্থায় রাজ্য বিজেপির অনেকেই মানছেন, পশ্চিমবঙ্গে এ বারে বিশেষ আশা নেই। বরং উল্টে ভোট শতাংশ কমে গেলে তার দায় নিতে হবে তাঁকেই। সে কারণেই কৌশল বদলেছেন অমিত শাহরা। গোটা রাজ্য জুড়ে প্রচারে লাভ নেই বুঝে বেছে বেছে কিছু আসনে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। সেই তালিকায় খড়্গপুর, নয়াগ্রাম, ময়ূরেশ্বরের মতোই রয়েছে হাওড়া উত্তর, জোড়াসাঁকো, বসিরহাট এবং উত্তরবঙ্গের কিছু আসন। প্রধানমন্ত্রী বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে এলোপাথাড়ি সভা না করিয়ে তাই আসন ভিত্তিক প্রচারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেমন ২৭ মার্চ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হয়ে প্রচারের জন্যই খড়্গপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। একই ভাবে ময়ূরেশ্বরে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের জন্য প্রচারে যাবেন অমিত শাহ। সংলগ্ন রামপুরহাট আসনে সভা করবেন সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

তবে এই কৌশল নিয়ে বেশি মুখ খুলছে না বিজেপি। তা ছাড়া প্রকাশ্যে এটা বলার মতোও নয়। তা হলে ভোট শুরুর আগেই বহু আসনে লড়াই থেকে ছিটকে যাবে দল! আবার প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সভার সংখ্যা কম হওয়ায় অস্বস্তিও হচ্ছে। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ক’দিন সময় দেবেন, তা কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে। কিন্তু তার অন্য অর্থ খুঁজতে চাইলে ভুল হবে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সব রকম সাহায্য করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement