ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগে। রবিবার খড়্গপুরে। — রামপ্রসাদ সাউ।
প্রথম দফার ভোটে ভূতের নেত্য নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বিস্তর। দ্বিতীয় দফার আগে খুন হয়েছেন তৃণমূল কর্মী। এখন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন চ্যালেঞ্জ মুখ্য নির্বাচনই কমিশনার নসিম জৈদীর কাছে।
জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখরও বলেন, “প্রতি বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ক্যুইক রেসপন্স টিমেও (টহলদার) কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।”
প্রথম দফায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ছ’টি কেন্দ্রে নির্বাচন হয়েছিল। এ বার ভোট বাকি ১৩টি কেন্দ্রে। নির্বাচনী উত্তাপের নিরিখে যা জঙ্গলমহলের থেকেও বেশি সংবেদনশীল। এ বার রয়েছে কেশপুর-গড়বেতা-সবং-নারায়ণগড়ের মতো কেন্দ্র।
এ বারের ভোটে নজরে থাকছে সবং, নারায়ণগড়, খড়্গপুর শহর ও গ্রামীণ। শাসক ও বিরোধীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা এখানে। স্বাভাবিকভাবেই কাজ করে আশঙ্কাও। নির্বাচনের দু’দিন আগেই সবংয়ে খুন, সে ইঙ্গিত দিয়েছে। রক্তপাতহীন নির্বাচন করাতে কমিশনও কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে।
জেলা নির্বাচন দফতর জানিয়েছে, এ বার ১৩টি কেন্দ্রের নির্বাচনের জন্য ১৭৬ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী থাকছে। এ ছাড়াও থাকছে রাজ্য পুলিশ। প্রতি বুথেই থাকবে আধা সামরিক বাহিনী। একটি বুথে ন্যূনতম অর্ধেক সেকশন অর্থাৎ চার জন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান থাকবে। বুথ চত্বরে একাধিক বুথ থাকলে থাকবে পুরো সেকশন। তারই সঙ্গে বিধানসভা কেন্দ্র পিছু গড়ে ৩৬টি বুথে মাইক্রো অবজারভার, ৩৩টি বুথে সিসিটিভি, ৮টি বুথে ওয়েব কাস্টিং ও ২৮টি বুথে ভিডিও ক্যামেরা বা ডিজিট্যাল ক্যামেরা রাখা হবে।
রবিবার সন্ধের মধ্যেই বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের সঙ্গে পৌঁছে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। নজর রাখা হচ্ছে, ভোটকর্মী বা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা স্থানীয় শাসক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ছেন কিনা। প্রথম ধাপে সে রকম অভিযোগও উঠেছিল। প্রতিটি কেন্দ্রে ক্যুইক রেসপন্স টিম, আরটি গাড়ি ও এইচআরএফএসও তৈরি রাখা হয়েছে।
সবমিলিয়ে ৫৪টি এলাকার রাস্তায় নজরদারি (নাকা) চলবে বলে পুলিশের এক সূত্রে খবর। কোথায় কোথায় নাকা করতে হবে তা ইতিমধ্যে থানাগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বেল জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর। গাড়ি, মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানো হয় রবিবারই। জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, “সর্বত্র নজরদারি চলছে। ভোটের দিনও কড়া নজরদারি চলবে। এতটুকুও ফাঁক থাকবে না।” জানা গিয়েছে, সবং থানা এলাকার চারটি, নারায়ণগড়ে দু’টি, বেলদায় দু’টি, পিংলায় তিনটি, মোহনপুরে চারটি, কেশপুরে তিনটি, আনন্দপুরে দু’টি, খড়্গপুর শহরে তিনটি, খড়্গপুর গ্রামীণে তিনটি, গড়বেতায় তিনটি, দাঁতনে চারটি, দাসপুরে দু’টি, ডেবরায় দু’টি, চন্দ্রকোনায় চারটি এলাকায়
নাকা হবে।
আগের দফায় অভিযোগ উঠেছিল, টহল না দিয়ে গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়েই কাটিয়ে দিয়েছিলেন জওয়ান ও পুলিশ বাহিনী। এ বার যাতে তেমন কিছু না-ঘটে সে জন্য টহলের ছবিও পাঠাতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা নির্বাচন। ঘুরে বেড়াচ্ছে লাইভ ছবি তুলে পাঠানোর গাড়ি ‘লামসা’ও। জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রে ভোট হয়েছিল বিকেল ৪টে পর্যন্ত। এ বার তা সকাল ৭টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত।