—ফাইল চিত্র।
দক্ষিণবঙ্গে পাঁচটা আসন আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু আরও কয়েকটা আসনের দাবির ব্যাপারে তাদের অবস্থান এখনও অনড়। সময় বয়েই যাচ্ছে দেখে এমতাবস্থায় ফের সিপিএমের দ্বারস্থ হল আইএসএফ। তাদের আর্জি, দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গে আরও অন্তত কয়েকটা আসনের ব্যবস্থা তাদের জন্য করা হোক।
বৈদ্যবাটীতে শনিবার রাতের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, বাদবাকি আসনের দাবির ব্যাপারে ফোনে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু আসন-রফায় মূল দৌত্যের ভূমিকায় থাকা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের দিনভর চেষ্টাতেও রবিবার আর কোনও জট খোলেনি। উত্তরবঙ্গের দু-একটি আসনের বিষয়ে বিবেচনা করতেও কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত নারাজ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার যে হেতু মান্নান বা প্রদীপ ভট্টাচার্যের নেই, তাই তাঁরা আতান্তরে। কংগ্রেসের এমন টালবাহানা দেখে এ দিন রাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এসে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসেন আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি। বেশি রাত পর্যন্ত বৈঠকের পরে নৌসাদ জানিয়েছেন, গোটাদুয়েক আসন ছাড়া বাকি বিষয়ে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা সম্পূর্ণ। প্রবীণ নেতা হিসেবে বিমান বসুকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং তাঁর উপরে নৌসাদেরা ভরসা রাখছেন। তবে কংগ্রেসের দিক থেকে তাঁরা আর নতুন কোনও বার্তা পাননি বলে নৌসাদের বক্তব্য।
কংগ্রেসকে নিয়ে বাম এবং আইএসএফ, দু’দিকেই সমস্যা বাড়ছে। বাম সূত্রের খবর, পুরুলিয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক নেপাল মাহাতো তাঁর বাঘমুণ্ডি আসন ছেড়ে এ বার জয়পুরে দাঁড়াতে চাইছেন। ওই দু’টি আসন পরস্পরের সঙ্গে অদল-বদল করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু তাতেও কংগ্রেস রাজি নয়। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘জয়পুর কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়ে বাঘমুণ্ডি নিতে আমরা তৈরি। বামফ্রন্টেও সে কথা জানিয়েছি। কিন্তু কংগ্রেস দুই আসনেরই দাবি ধরে থাকলে সেটা জোটের মনোভাব নয়!’’ নেপালবাবু বা প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত অসিত মিত্র, দু’জনের সঙ্গেই অবশ্য বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বিভিন্ন জেলায় সভা-মিছিল করলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কেন দায়িত্ব নিয়ে বসে আসন-রফার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দিচ্ছেন না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে জোট-শিবিরে।