ছাপ্পা ভোট রুখতে দিনভর ব্যস্ত ইমতিয়াজ

খামার নাওবাঁধ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তখন ভোট দেওয়া সবে শুরু হয়েছে। এলাকার ভোটার সংখ্যা ৮৫২ জন। সকাল ৯টার মধ্যেই ভোট পড়ে গিয়েছে ২২৩টি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৩২
Share:

উত্তেজিত সিপিএম প্রার্থী। ছবি দু’টি তুলেছেন সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

খামার নাওবাঁধ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তখন ভোট দেওয়া সবে শুরু হয়েছে। এলাকার ভোটার সংখ্যা ৮৫২ জন। সকাল ৯টার মধ্যেই ভোট পড়ে গিয়েছে ২২৩টি। প্রিসাইডিং অফিসারের প্ররোচনাতেই সেখানে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে তৃণমূল, খবর এল হাড়োয়ার সিপিএম প্রার্থী ইমতিয়াজ আলির কাছে। কপালের ভাঁজ একটু যেন গাঢ়় হল। মুহূর্তের মধ্যে কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ওই বুথের দিকে গাড়ি রওনা করালেন ইমতিয়াজ। ফোন করলেন সেক্টর অফিসারকে। খবর গেল কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে। তাঁরা আবার খবর দিলেন উপর মহলে। ততক্ষণে বুথ ঘিরে ফেলে চলছে হুমকি, শাসানি। সিপিএমের এক কর্মী আড়ালে ডেকে বললেন, ‘‘দেখেছেন তৃণমূলের কাণ্ডকারখানা?’’

Advertisement

অন্য দিকে, বুথের বাইরে তখন চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলা ভোটারও। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা ভোট দিতে এসে দেখি আমাদের ভোট পড়ে গিয়েছে।’’ দুই তৃণমূল কর্মীকে দেখিয়ে আমনা বিবি, আফসানা খাতুনেরা বলেন, ‘‘আমাদের ভোট এই দু’জন দিয়ে দিয়েছে।’’ একই অভিযোগ অন্যদেরও।

ভোটারদের বিক্ষোভে ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ থাকে‌ ভোটকেন্দ্র। যদিও এই অভিযোগই অস্বীকার করলেন প্রিসাইডিং অফিসার হাসিবুর রহমান। বললেন, কোনও ছাপ্পাভোট পড়েনি এখানে। ভুলবশত দু’একটি ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

ছাপ্পা দিচ্ছে এ-ই। অভিযোগের ভিত্তিতে পরে গ্রেফতারও করা তাকে।

ঠা ঠা রোদে দাঁড়িয়ে আছি। ইতিমধ্যে এল কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ। হাজির হলেন সেক্টর অফিসার অশোক দত্ত। তিনি আব্দুল কালাম নামে এক তৃণমূল কর্মী তথা এজেন্টকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন। ইমতিয়াজ প্রিসাইডিং অফিসারকে বদলির দাবি জানালেন।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে এই নিয়ে শুরু হল তাঁর বচসা। ইমতিয়াজ থামতেই চান না। ও দিকে বাহিনীর অফিসারেরা বোঝাতে চাইছেন, ‘‘আপ শোর মত কিজিয়ে। জো করনা থা, হামনে কিয়া।’’

কিন্তু কে শোনে কার কথা। শেষমেশ বিরক্ত হয়ে অফিসারেরা ইমতিয়াজকে ধরে সরিয়ে দিলেন বুথের বাইরে। তুলে দিলেন গাড়িতে। চালককে নির্দেশ দিলেন, এখনওই এলাকা ছাড়ার। ইমতিয়াজ বলেন, ‘‘আমাদের এজেন্টকে এই বুথে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। তৃণমূলের এজেন্টরাই বসে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল প্রার্থী নুরুল ইসলাম পাল্টা বলেন ‘‘বিভিন্ন জায়গায় জোট প্রার্থীরাই ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন।’’ অন্য দিকে, দেগঙ্গা বিধানসভা এলাকার কদম্বগাছিতে এ দিন আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকজনের বচসা, ধাক্কাধাক্কি হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement