ঊর্ধ্বসীমা তুলে শিল্পকে স্বস্তি দিতে চায় কংগ্রেস

ক’দিন আগে বামফ্রন্টের তরফে ইস্তাহার প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, ক্ষমতায় এলে শিল্পায়নের পথেই থাকবেন তাঁরা। বুধবার ইস্তাহার প্রকাশ করে একই অঙ্গীকার করতে চলেছে কংগ্রেসও। এমনকী রাজ্যে বিরোধী জোটের অন্যতম এই শরিক দল এও জানাতে চলেছে যে, রাজ্যে সরকার গঠন করতে পারলে অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য শহরাঞ্চলে জমির উর্ধ্বসীমা আইন বিলোপ করবেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

ক’দিন আগে বামফ্রন্টের তরফে ইস্তাহার প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, ক্ষমতায় এলে শিল্পায়নের পথেই থাকবেন তাঁরা। বুধবার ইস্তাহার প্রকাশ করে একই অঙ্গীকার করতে চলেছে কংগ্রেসও। এমনকী রাজ্যে বিরোধী জোটের অন্যতম এই শরিক দল এও জানাতে চলেছে যে, রাজ্যে সরকার গঠন করতে পারলে অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য শহরাঞ্চলে জমির উর্ধ্বসীমা আইন বিলোপ করবেন তাঁরা।

Advertisement

শিল্পের জন্য জোর করে জমি অধিগ্রহণে প্রথম থেকেই গররাজি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরাঞ্চলে জমির উর্ধ্বসীমা আইন বিলোপেরও বিপক্ষে তিনি। কিন্তু তাতে শিল্পায়নের প্রক্রিয়া যে মুখ থুবড়ে পড়েছে তা বাস্তব। শিল্প না হওয়ায় কর্মসংস্থানেরও সুযোগ বাড়ছে না। তাতে রাজ্যের বড় অংশের মানুষের মধ্যে অসন্তোষও পুঞ্জীভূত হয়েছে।

কংগ্রেসের ইস্তাহার রচনা কমিটির এক সদস্য আজ বলেন, শিল্পে পিছিয়ে থাকাই পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার বড় কারণ। তাই শিল্পায়ন ও সংস্কারের পথে বাধা কাটানোয় অগ্রাধিকার দিতে চাইছে দল। তাঁর কথায়, ‘‘বাম ও কংগ্রেসের ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি যৌথ ভাবে ক্ষমতায় এলে শিল্পের জন্য জমির কেনাবেচা সহজ করার চেষ্টা হবে। সেই সূত্রে শহরাঞ্চলে জমির উর্ধ্বসীমা আইন তুলে দেওয়ার পক্ষেও জোরালো সওয়াল করবে কংগ্রেস।’’ কংগ্রেসের ওই নেতা আরও বলেন, জমির উর্ধ্বসীমা আইন বিলোপ না করলেও বর্তমান তৃণমূল সরকার এ ব্যাপারে একটা জানালা তৈরি করেছে। সরকার চাইলে কাউকে এক লপ্তে অনেকটা জমি কেনার অধিকার দিতে পারে। কিন্তু এই ব্যবস্থায় দুর্নীতির সম্ভাবনা বেশি। তাই ওই নেতিবাচক আইন বিলোপ প্রয়োজন। তা ছাড়া শিল্প স্থাপনের প্রক্রিয়া সরল করার প্রস্তাব রাখা হবে ইস্তাহারে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, শেষ বার বামফ্রন্ট সরকার যখন ছিল, তখন জমির উর্ধ্বসীমা শিথিল করার একটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বামফ্রন্টের মধ্যেই প্রবল আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত ওই বিল প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল। ফলে বিরোধী জোট সরকার গড়ার অবস্থায় পৌঁছলে কংগ্রেসের এই প্রস্তাব বামেরা কত দূর মানবে, তার উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কংগ্রেসের যুক্তি, তখন পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যের চেষ্টা করা হবে। আপাতত যে ইস্তাহার কংগ্রেস
প্রকাশ করতে চলেছে তা দলের স্বাধীন চিন্তা ও মতাদর্শের ভিত্তিতে তৈরি
করা হয়েছে।

বুধবার কংগ্রেসের ইস্তাহার প্রকাশিত হওয়ার কথা। সূত্রের মতে, দল যে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে যে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, তার উল্লেখ ইস্তাহারে রাখবে কংগ্রেস। একই সঙ্গে বলা হবে, যৌথ ভাবে ভোটে লড়াই করে ক্ষমতায় এলেও কোনও ভাবেই কংগ্রেসের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী অবস্থানকে সমর্থন করবে না তারা। আর কী থাকছে ইস্তাহারে? কংগ্রেস সূত্রে খবর, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার উল্লেখ থাকবে ইস্তাহারে। রাজ্য পুলিশে অন্তত তিরিশ শতাংশ মহিলা নিয়োগের প্রস্তাব থাকবে। সেই সঙ্গে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ হেল্পলাইন চালু করার প্রস্তাব থাকবে। এ ছাড়া প্রবাসী বাঙালিদের জন্য রাজ্য সরকারের পৃথক একটি দফতর গঠনের প্রস্তাবও থাকছে। যাতে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প বা ব্যবসা শুরু করার জন্য আগ্রহী প্রবাসী ভারতীয়রা প্রয়োজন মতো সাহায্য পেতে পারেন। আবার কলকাতার বাইরে গিয়ে অসুবিধা বা বিপদে পড়লে সরকারের থেকে দ্রুত ও প্রয়োজন মতো সাহায্য পেতে পারেন রাজ্যের মানুষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement