বীরভূমে ভোট আছে, অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন, তাঁরও বাহিনীও ছড়িয়ে রয়েছে গোটা জেলায়। তা সত্ত্বেও সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠবে না, পুলিশ-প্রশাসনকে দলের কাজে ব্যবহার করা অভিযোগ উঠবে না, সে কি হয়? হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের উজিরপুরে পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও তাঁর সাগরেদদের বুথে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। বাধা পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন কংগ্রেস সমর্থকদের উপর। তবে প্রতিরোধও ছিল যথেষ্ট মজবুত। গ্রামবাসীদের হাতেই ঘেরাও হয়ে গেলেন সাব-ইনস্পেক্টর।
সকাল থেকে ভোট চলছিল নির্বিঘ্নেই। দুপুরে নলহাটি থানার সাব-ইনস্পেক্টর অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় উজিরপুরের তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন। বিভাস অধিকারীর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। কেন্দ্রীয় বাহিনী বা প্রিসাইডিং অফিসার, কারও অনুমতি না নিয়েই ওই সাব-ইনস্পেক্টর বিভাস অধিকারী এবং তাঁর সাগরেদদের নিয়ে বুথের ভিতরে ঢোকেন। স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী আবুল হাসান বললেন, তৃণমূলের লোকজনকে নিয়ে পুলিশের লোককে বুথে ঢুকতে দেখেই আমরা বাধা দিই। আমরা জানতে চাই, ওঁদের কেন বুথে ঢোকানো হচ্ছে। তখন অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, উনি নির্বাচন কমিশনের অবজার্ভার। আমরা বিভাস অধিকারীকে চিনি। তাই বুঝতে পারি, অরিজিৎ মিথ্যা বলছেন। আমরা অবজার্ভারের বৈধ কাগজ দেখতে চাই। তাতে অরিজিৎ চক্রবর্তী এবং তৃণণূল কর্মীরা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রচণ্ড মারধর করেন।’’
পুলিশ এবং তৃণমূলের এই যৌথ আক্রমণে আবুল হাসান ছাড়াও রফিকুল ইসলাম এবং ওবায়দুল্লা শেখ নামে আরও দুই কংগ্রেস কর্মী জখম হন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। গ্রামবাসীরা ঘিরে ফেলেন পুলিশ এবং তৃণমূল নেতাকে। উত্তেজনা এমন চরমে ওঠে যে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায় বেশ কিছু ক্ষণের জন্য। তার পর অতিরিক্ত বাহিনী আনিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
হাসনের গ্রামে পুলিশ এবং তৃণমূলের এই যৌথ অভিযান যে ভাবে রুখে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা, তা অনুব্রত মণ্ডলের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ।